করোনাভাইরাসের পর রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ঘোরতর করে তুলছে। ঠিক এমন সময়ে বন্যার ছোবল মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ দুঃসময়ে সুখবর হয়ে আবির্ভূত হয়েছে দেশের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছোঁয়ার ঘটনা। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে হারবে না সে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে রপ্তানি আয়ের টার্গেট অতিক্রমের ঘটনা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মতে, করোনা মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রপ্তানি আয় যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছুঁয়েছে তা একটি বড় অর্জন। সরকার রপ্তানি বাড়াতে বিভিন্ন নীতিমালা গ্রহণ ও আর্থিক প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে। দেশের উদ্যোক্তারাও সে সুযোগ গ্রহণ করে রপ্তানি আয় বাড়াতে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া নতুন পণ্য নতুন বাজারে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক মিশনকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং সেবা খাত থেকে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের টার্গেট ছিল। এর মধ্যে অর্থবছরের ১১ মাসে দেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের। চলতি মাসের আয় যুক্ত হলে এটি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। সেবা খাতসহ চলতি বছরের রপ্তানি আয় ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। টাকার হিসাবে এ অর্থের পরিমাণ ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০০ কোটি। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের আরেকটি প্রধান উৎস রেমিট্যান্স আয়।
এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক না হলেও বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও তা যে কমেনি এটি একটি সান্ত্বনা। দেশের রপ্তানি আয় বিপুলভাবে বাড়লেও একই সঙ্গে বাড়ছে আমদানি ব্যয়। বিশেষত মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি খাতে ব্যয় বাড়ছে দ্রুত হারে। ফলে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স দুই খাতকে আরও সক্রিয় রাখতে হবে জাতীয় স্বার্থেই।