জাল নোট দেশের অর্থনীতির ওপর এক সাক্ষাৎ বিপদ। এ কথা ঠিক, দুনিয়ার সব দেশেই টাকা জালের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশেও এটি এক সমস্যা। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও জাল টাকার সুসংবদ্ধ চক্র সক্রিয়। এ চক্রের সঙ্গে দেশি-বিদেশি অপরাধীরা জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। পাকিস্তান থেকে এক সময় জাল টাকা আসত বাংলাদেশে। এমনকি ভারতীয় জাল রুপি তৈরি করে তা বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে বাংলাদেশে এনে তারপর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাচার করা হতো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় এ ধরনের পাচার হ্রাস পেলেও একেবারে বন্ধ হয়েছে কি না নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই। দেশে জাল নোট তৈরির অনেক চক্র সক্রিয়। বুধবার রাতে হুমায়ুন কবির নামে পুলিশের এক চাকরিচ্যুত সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে জাল নোট তৈরির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে। ডিবি পুলিশ মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকার ৪ নম্বর রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, একটি ল্যাপটপ, প্রিন্টার, লেমিনেশন মেশিন, পেস্টিং গামের কৌটা, তিনটি টাকা তৈরির ডাইস, দুই বান্ডিল ফয়েল পেপার, দুই প্যাকেট টাকা তৈরির কাগজ ও দুটি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করা হয়। এ অবৈধ কাজে তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন কি না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘এক সময় তিনি পুলিশে চাকরি করতেন। এখন জাল টাকা তৈরি করছেন। তাই বলে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ছাড় দিচ্ছে না। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অবৈধভাবে কেউ বড়লোক হতে চাইলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ুন জানিয়েছেন, তারা জাল টাকা পাচারও করতেন। বিপুল পরিমাণ জাল নোট এবং তা তৈরির উপকরণসহ পুলিশের এক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাকে আটক করেছে। খবরটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। জাল নোটের বিরুদ্ধে আইনগত দুর্বলতায় এর সঙ্গে জড়িতরা সহজেই ছাড়া পেয়ে যান। আমরা এ কলামে এ বিষয়ে বারবার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এ বিষয়ে কর্তাব্যক্তিদের সম্বিত ফিরে আসবে- আমরা সে আশাই করতে চাই।