রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

রেলক্রসিং দুর্ঘটনা

দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন

পৃথিবীতে ট্রেনকে সবচেয়ে নিরাপদ যানবাহন ভাবা হয়। একই সঙ্গে ট্রেন ভ্রমণ সাশ্রয়ীও বটে। কিন্তু বাংলাদেশে ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা মোটেই নিরাপদ নয়। হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ অরক্ষিত রেলক্রসিং। সারা দেশে ২ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথে ২ হাজার ৫৪১টি রেলক্রসিং আছে। এর মধ্যে ২ হাজার ১৭০টিতে অর্থাৎ ৮৫ শতাংশেরই গেট বা যান নিয়ন্ত্রণ করার কোনো কর্মীও নেই। শুক্রবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেন পর্যটকবাহী একটি মাইক্রোবাসকে প্রায় ১ কিলোমিটার ঠেলে নিয়ে যায়। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কোনো গেটম্যান ছিল না। সড়কের ওপর রেলক্রসিংয়ে ছিল না সিগন্যাল। এ কারণে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই রেললাইনের ওপর উঠে যায় মাইক্রোবাসটি। মাইক্রোবাসে মোট ১৫ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন সুস্থ আছেন। ট্রেন ধাক্কা দেওয়ার সময়ই তিনি লাফিয়ে মাটিতে পড়ে যান। তাই এটিকে নিছক দুর্ঘটনা না বলে দুর্ঘটনাজনিত হত্যা বলাই উত্তম। মাইক্রোবাস চালকের পাশাপাশি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকেই এর দায় নিতে হবে। যে রেললাইনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে, সেই রেললাইনকে এভাবে অনিরাপদ রাখা কেবল দায়িত্বহীনতা নয়, অমার্জনীয় অপরাধ। মিরসরাইয়ের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার দায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কিছুতেই এড়াতে পারে না। দুর্ঘটনার পর প্রতিবারই তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি প্রতিবেদনও দাখিল করে। কিন্তু তারপর সবকিছু আগের নিয়মেই চলে। আমরা দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করছি। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।  আমরা আশা করব এ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে যথাযথ সতর্কতা পালন করবে। কারণ, যে কোনো অসতর্কতা বা অবহেলার পরিণতি কী হতে পারে, এ দুর্ঘটনা আমাদের তা দেখিয়ে দিয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর