চলতি বছর জলবায়ুর উন্মত্ত আচরণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দেশের হাওর এলাকায় আগাম বন্যায় ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। আবার বহু এলাকায় খরায় পাট জাগ দেওয়ার মতো পানির অভাব অনুভূত হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিলেট বিভাগে স্মরণাতীতকালের সবচেয়ে ভয়াল বন্যা আঘাত হেনেছে। উত্তরাঞ্চলেও অনুভূত হয়েছিল সে থাবা। সে ক্ষত উপশম হওয়ার আগেই তিস্তা ও যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। রংপুরের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় ৪৪টি গেটই খুলে দেওয়া হয়েছে। একই ধারায় পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি দুই দিন ধরে বাড়ছে। তিস্তার পানি সোমবার বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এ পানি আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সোমবার বেলা ৩টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫২.৭০ সেন্টিমিটার; যা বিপৎসীমার বেশ ওপরে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও তিস্তাপাড়ে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিম্নাঞ্চল ও চরের মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করেছে। উজান থেকে আসা ঢল ও বর্ষণের কারণে দেশের অন্য এলাকায়ও নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যা থাবা বিস্তার করলে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রথম দফার বন্যায় দেশের যোগাযোগব্যবস্থা- রাস্তা ব্রিজ কালভার্টের যে ক্ষতি হয়েছে তা এক কথায় ভয়াবহ। কৃষির ক্ষতিও ব্যাপক। এর প্রভাবে কাঁচা মরিচের কেজি ২০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশিতে বিক্রি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। সবজির দামও ধরাছোঁয়ার বাইরে। দ্বিতীয় দফা বন্যা আঘাত হানতে পারে এ আশঙ্কা মনে রেখে প্রশাসনকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিতে হবে।