দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানিতে সুবাতাস বইছে এবং চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে প্রায় ৭ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। সার্বিক মূল্যায়নে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এটি ইতিবাচক খবর। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলে জ্বালানি ও খাদ্য আমদানির খরচ বিপুলভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তি চাপের মুখে। এমন এক মুহূর্তে জনশক্তি রপ্তানির প্রবৃদ্ধি স্বস্তির বিষয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেখানে বছরজুড়ে ৭ লাখ কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি সে ক্ষেত্রে সাত মাসে প্রায় সেই-সংখ্যক কর্মী পাঠানোকে বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, প্রথম সাত মাসের ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছর ১০ লাখের বেশি কর্মী বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে এবং এটি একটি রেকর্ড। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যানুসারে এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে ৬ লাখ ৯১ হাজার ১৭ জনকে বিদেশে কাজের জন্য পাঠানো
সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে মাসে ১ লাখের বেশি কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে চারবার। জানুয়ারিতে বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৬৯৮, ফেব্রুয়ারিতে ৯২ হাজার ৫৯৬, মার্চে ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৬, এপ্রিলে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৭৫, মে-তে ৭৭ হাজার ৪২১, জুনে ১ লাখ ১১ হাজার ৫৩৯ এবং জুলাইয়ে ৭৫ হাজার ৪৯৯ জনের। অবশ্য সর্বাধিক কর্মী পাঠানোর রেকর্ড হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। সে সময় এক মাসেই ১ লাখ ৩১ হাজার ৩১৬ জন কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক মাসে এত বেশি জনশক্তি রপ্তানি হয়নি। গত সাত মাসে বিশালসংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও তারা মূলত গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ- সৌদি আরব, ওমান ও আরব আমিরাতে। মোট ৬ লাখ ৯১ হাজার জনের মধ্যে ৫ লাখ ৯৩ হাজার জনই গেছেন এ তিন দেশে। অতিসম্প্রতি মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি শুরু হওয়ায় আশা করা হচ্ছে সে দেশটিতেই বিপুলসংখ্যক কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স যেহেতু দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় খাত, সেহেতু তা দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য দৃঢ়ীকরণে ভূমিকা রাখবে এমনটিই প্রত্যাশিত।