শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

অবাঞ্ছিত অতিথি

অভিশাপমুক্তির জন্য তৎপর হতে হবে

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে আছে। পশ্চিমা দেশগুলোর অনুরোধের ঢেঁকি গিলতে গিয়ে বাংলাদেশ সাক্ষাৎ সংকটের মুখে পড়েছে। পরজীবী একটি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ চাপের কারণেও সরকার পাঁচ বছর আগে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয়। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, মিয়ানমারের সেনা অভিযানের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭২ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৩। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে রাখাইন প্রদেশ থেকে পালিয়ে আসেন কমপক্ষে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা। তার আগে থেকেই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বাস করছেন। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিছুটা হলেও সরব ছিল। চীনের নেতৃত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকসহ প্রত্যাবাসনের রূপরেখাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হলে ভাটা পড়ে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে। করোনা সংকট কাটিয়ে বিশ্ব স্বাভাবিক হলে শুরু হয় প্রত্যাবাসনের আলোচনা। কিন্তু এ বছরের শুরুতে ইউক্রেন সংকট শুরু হলে আন্তর্জাতিক মহলের নজর চলে যায় ইউক্রেনের দিকে। ফলে কমে আসে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে চীন-তাইওয়ান সংকট। এতে অনেকাংশে ভাটা পড়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহে ভাটা পড়লেও থেমে নেই বাংলাদেশের তৎপরতা। কূটনীতির অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি উত্থাপন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আশ্রয়প্রার্থীদের খরচ জোগাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ক্রমাগত কমছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে চাহিদার মাত্র ৪৯ শতাংশ সহায়তা পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গাদের অবস্থান পরিবেশের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। আশ্রিত এ ভিনদেশিরা ব্যাপক হারে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকায় দেশের যুবসমাজের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে অবাঞ্ছিত অতিথি পোষার অভিশাশমুক্তির লক্ষ্যে সরকারকে তৎপর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর