দেশে একের পর এক পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন উচ্চশিক্ষিত বেকার সৃষ্টিতেই মূলত অবদান রাখছে এবং তা একটি নিষ্ঠুর বাস্তবতা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে শিব গড়তে বানর গড়ার প্রক্রিয়া উপাচার্য নামের অতি সম্মানিত পদটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে নানাভাবে। এলোমেলো করে দে মা লুটপুটে খাই অবস্থাই চলছে বিশ্ববিদ্যালয় নামের কিছু প্রতিষ্ঠানে। প্রায় দুই বছর আগে স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ওঠে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের করিৎকর্মা উপাচার্যের বিরুদ্ধে। নির্লজ্জ সে আচরণের বিরুদ্ধে অবশেষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উপাচার্যের বিদায়লগ্নে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিবের স্বাক্ষর করা চিঠিতে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শহীদুর রহমান খানের ছেলে, মেয়ে, শ্যালক-শ্যালিকার ছেলে, ভাতিজাসহ নয়জনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ‘বিষয় বিশেষজ্ঞ’ ছাড়া বাছাই বোর্ড গঠন করে ২০টি বিষয়ে দেওয়া ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করতে বলা হয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উপাচার্য হিসেবে শহীদুর রহমানকে নিয়োগের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২০ সালে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের পাঁচ সদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে উপাচার্যের আত্মীয়স্বজনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে পারিবারিক সম্পত্তি বানাতে তিনি তাঁর স্ত্রীকে সরাসরি অধ্যাপক বানাবারও কসরত করেছিলেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সে চেষ্টা রোধ করে দেয়। দেরিতে হলেও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ক্ষমতার অব্যবহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ অভিনন্দনযোগ্য। তবে এসব অপকর্মের পালের গোদা যিনি তাঁর বিরুদ্ধে অপসারণের ব্যবস্থা নিলে সেটি আরও গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হতো।