রাজধানীর আবাসিক এলাকাগুলো বাণিজ্যিক এলাকায় রূপান্তরিত হয়ে পড়ছে রাজউকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর নজরদারির অভাবে। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে মতিঝিল-দিলকুশা বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। একসময় ঢাকার প্রধানতম কমার্শিয়াল হাব ছিল এলাকা দুটি। অফিসপাড়া, ব্যাংকপাড়া বলতে তখন সবাই শুধু মতিঝিল এবং এর আশপাশকেই বুঝত। তবে সময়ের বিবর্তনে ঢাকার নতুন বাণিজ্যিক কেন্দ্র বা কমার্শিয়াল হাবের রূপ পেতে যাচ্ছে গুলশান-বনানী। নামে আবাসিক হলেও বহু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় এখন এলাকা দুটিতে। রমরমা ব্যবসা-বাণিজ্যে ঘেরা এলাকা দুটি এখন যানজট, অবৈধ পার্কিং, শব্দদূষণসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। বাণিজ্যিকীকরণে অতিষ্ঠ গুলশান-বনানী আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই এ এলাকা দুটিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে। স্কুল- কলেজ, বিপণিবিতান, রেস্টুরেন্ট, বিউটি পারলার, কোচিং সেন্টার, বার, গার্মেন্টসহ কী নেই গুলশান-বনানীতে? যে-যার ইচ্ছামতো বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করায় এলাকা দুটি তার বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে। একই অবস্থা ধানমন্ডির। ১৫ বছর আগে ধানমন্ডিতে চার তলার ওপরে কোনো বাড়ি ছিল না। এখন ইচ্ছামতো উচ্চতর দালানকোঠা তৈরি চলছে। ভাড়া দেওয়া হচ্ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে। ধানমন্ডি থেকেই বাণিজ্যিকীকরণের ভাইরাস নগরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। গুলশান- বনানী-বারিধারায় এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ভয়াবহভাবে। গুলশান- বনানীর নকশায় বাণিজ্যিক প্রয়োজনে আলাদা স্পট আছে। অথচ আস্তে আস্তে ঘিঞ্জিতে পরিণত হচ্ছে পরিকল্পিত নকশায় গড়ে ওঠা আবাসিক এলাকা দুটি। আর এজন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। রাজধানীর আবাসিক এলাকাগুলো গড়ে উঠেছিল বসবাসের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু বাণিজ্যকীকরণে অসুস্থ আবহ শুরু হয়েছে রাজউকের প্রতিটি আবাসিক এলাকায়।
বাদ নেই উত্তরাও। এ প্রবণতা রাজধানীকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলবে কি না সময় থাকতেই ভাবতে হবে।