পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আউলিয়াঘাটে রবিবার নৌকাডুবিতে ৩৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৫৫ জন। দুর্গাপূজার মহালয়া উপলক্ষে বদেশ্বরী মন্দিরের বিশেষ পূজা-অর্চনায় যোগদানের উদ্দেশে করতোয়ার অন্য পাড়ে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে নৌকাটি ডুবে যায়। এ নৌকাডুবির ঘটনায় পঞ্চগড়সহ সারা দেশে গভীর শোকের ছায়া বিস্তার করছে। স্বজনদের কান্নায় শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে করতোয়ার তীরে। দুই দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে উজানের ঢলে করতোয়ার পানি বৃদ্ধি পায়। উত্তাল নদীর মাঝবরাবর নৌকাডুবি হওয়ায় ব্যাপকসংখ্যক প্রাণহানি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত, অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণেই নৌকাটি ডুবে যায়। দুপুরে পূজারিরা নদীর ওপারে অবস্থিত বদেশ্বরী মন্দিরে পূজায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। মাঝনদীতে নৌকা কাত হয়ে ডুবে যাওয়ার সময় যাত্রীরা চিৎকার করতে থাকেন। যারা সাঁতার জানতেন তারা কোনোরকমে ডাঙায় উঠতে পারলেও বাকিরা তলিয়ে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত যে ২৪ জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়, তারা সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। মৃতের অধিকাংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। পরে ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা গিয়ে একের পর এক মৃতদেহ উদ্ধার করেন। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মৃতদেহ সৎকারে প্রতি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। নৌকাডুবিতে বিপুলসংখ্যক তীর্থযাত্রীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানসন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনেরা শোক প্রকাশ করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণভাবে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদী পারাপারের কারণে বিপুলসংখ্যক তীর্থযাত্রীকে অসহায়ভাবে প্রাণ দিতে হলো। যাত্রী ও নৌকা চালকের অসচেতনতার শিকার হলো বিপুলসংখ্যক তীর্থযাত্রী। এ ধরনের দায়িত্বহীনতা বন্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।