বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

হাতি নিধন

বিপন্ন প্রাণীটি রক্ষার উদ্যোগ নিন

বাংলাদেশে একসময় ছিল বিপুলসংখ্যক হাতি। বন্যহাতি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলাজুড়ে। রাজধানীতে ছিল পোষা হাতির দাপট। হাতিরঝিল, এলিফ্যান্ট রোড সে স্মৃতিই বহন করছে। কিন্তু কিছু লোভী মানুষের শিকার হয়ে দেশ থেকে বিপন্ন হতে চলেছে হাতি নামের সবচেয়ে বৃহৎ স্থলজাত প্রাণী। বৈরী পরিবেশ সত্ত্বেও বাংলাদেশে সামান্য কিছু হাতি টিকে আছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু বনাঞ্চলে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর বেশ কিছু বনাঞ্চল নিধনের পথে। বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জঙ্গলে পুঁইছড়ি পাহাড়েও চলছে একের পর এক হাতি নিধন। সম্প্রতি একটি হাতিকে হত্যা করে পুঁতে রাখা হয়েছিল গভীর জঙ্গলে। ২০ সেপ্টেম্বর হাতিটির ময়নাতদন্ত হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, হাতিটি হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে জায়গাটি ঢেকে দেওয়া হয় ডালপালা দিয়ে। বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত আট বছরে বাঁশখালীর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে মারা গেছে ১৯টি হাতি। এর মধ্যে কালীপুর রেঞ্জে মারা গেছে ১২টি বন্যহাতি, জলদী ও পুঁইছড়ি রেঞ্জে সাতটি। অসুস্থ হয়ে পড়া তিনটি হাতিকে সুস্থ করে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ১১ জুন উপজেলার জঙ্গল কালীপুরের গভীর জঙ্গলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মারা হয়েছে একটি হাতি। এর আগেও জঙ্গল কালীপুরে মৃত হাতির শাবক পাওয়া গেছে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর বাঁশখালীর লটমণি পাহাড়ে একটি হাতি হত্যা করে মাটিচাপা দেয় দুষ্কৃতকারীরা। একই বছরের ১২ নভেম্বর বাঁশখালীর চাম্বল বন বিট অফিসের অদূরে আরও একটি হাতি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কীভাবে হাতি হত্যার মৃত্যুকূপ হয়ে উঠেছে একের পর এক হাতি হত্যা তারই প্রমাণ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এজন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা আছে বলে মনে হয় না। দেশকে হাতিশূন্য না দেখতে চাইলে বিপন্ন প্রায় এ প্রাণীটি রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর