গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে শিল্পোৎপাদনের ওপর নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানা। রপ্তানিমুখী শিল্পগুলো জ্বালানি সংকটের সম্মুখীন হওয়ায় রপ্তানি আয় হ্রাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে। বিদ্যুতের অভাবে জেনারেটর দিয়ে শিল্পোৎপাদন অব্যাহত রাখতে গিয়ে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। দেশে বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১০ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। শিল্প খাতে দৈনিক চাহিদা ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট। রাত ৮টায় দোকান বন্ধ, অফিস সময় পরিবর্তনসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার দৈনিক ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে উৎপাদনমুখী শিল্পে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরবরাহের আশা করলেও তা পূরণ হয়নি। বরং রাত ৮টার পর বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৯৪৮ মেগাওয়াট, রাত ৯টায় চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। প্রতিদিন দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। জুনে গ্যাস সরবরাহ ছিল ৩ হাজার ১০০ এমএমসিএফ। মোট সরবরাহের মধ্যে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ গ্যাস শিল্প খাতে, ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ সার কারখানায় ও ৪২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও ডলার সংকটের ফলে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করায় বর্তমানে দৈনিক সরবরাহ ২ হাজার ৮০০ এমএমসিএফের আশপাশে। ফলে কমে গেছে গ্যাসের চাপ। বিদ্যুতের অভাবে তৈরি পোশাক টেক্সটাইল প্লাস্টিক সিমেন্ট সিরামিক ইস্পাত সার ইলেকট্রনিক্স ও হিমায়িত পণ্য শিল্পে হাহাকার চলছে। সিমেন্ট রড ইত্যাদির উৎপাদন হ্রাস এবং একই কারণে দাম বৃদ্ধিতে লাখ লাখ নির্মাণশ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। কারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে জ্বালানি সংকটের অবসান ঘটাতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
দেশের অর্থনীতির স্বার্থে একে নিতে হবে চ্যালেঞ্জ হিসেবে।