সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

অন্তর্ঘাত নাকি ব্যর্থতা

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

অন্তর্ঘাত নাকি ব্যর্থতা

নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। তাদের একটা বড় ভুল দেশের জন্য মহাসর্বনাশের বিষয় হতে পারে। বিগত দিনে এমন ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। এক আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশনের বদৌলতে ২০০৭-২০০৮ মেয়াদে রাষ্ট্র এক অনির্দিষ্ট, অজানা গহিন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। ২০০৬ সালে এসে আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন এবং ইয়াজউদ্দিনের মতো ইয়েস ম্যাডাম মার্কা রাষ্ট্রপতি না হলে বাংলাদেশকে ওইরকম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হতো না। ২০০৭-২০০৮ মেয়াদের অভিশপ্ত কর্মকান্ডের পরিণতি থেকে রাষ্ট্র ও রাজনীতি এখনো বের হতে পারেনি। কিন্তু এখন আবার সে সময়ের কুশীলবরা নতুন করে একই রকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টায় ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছেন। তারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনবরত কুৎসা রটনা করছেন, ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং দাবি জানাচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে যেন অস্বীকৃতি জানায়। একবার ভেবে দেখুন তারা দেশকে কত বড় সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে ফেলার চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলা শুরু করেছেন দুই অথবা তিন বছর মেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হতে হবে, সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে ইত্যাদি। দু-তিন বছর মেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং সংবিধান পরিবর্তন জনম্যান্ডেট ছাড়া কয়েকজন একটি টেবিলে বসে করে ফেলা মানে গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা শুধু নয়, হত্যা করার সমান। তাদের মধ্য থেকে কেউ আবার দুই বছর মেয়াদি সরকারের হাস্যকর রূপরেখাও প্রকাশ করে ফেলেছেন। এটা সবাই জানেন যে, এখন আবার নতুনভাবে আবির্ভূত হওয়া ২০০৭-২০০৮ মেয়াদের সব কুশীলবের প্রধান ও এক নম্বর লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে মাইনাস করা এবং নির্বাসনে পাঠানো। ২০০৭-২০০৮ মেয়াদে তারা জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দেশের মানুষ এবং আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতা-কর্মীদের অসীম সাহসী সংগ্রামের কারণে তখন তারা সফল হননি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার বিকল্প কে বা কারা। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, নাকি ইরাকের নুরী আল মালিকী বা আফগানিস্তানের হামিদ কারজাইয়ের মতো কেউ। বেগম খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানকে বাংলাদেশের মানুষ ২০০১-২০০৬ মেয়াদে দেখেছে, সে শাসন অব্যাহত থাকলে এতদিনে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে আরেকটি আফগানিস্তান হতো। এ কথাগুলো শুধু আমাদের নয়, বিশ্বের নামকরা থিঙ্কট্যাংক ও কীর্তিমান গবেষকরা বড় বড় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং গবেষণাধর্মী গ্রন্থে এসব তুলে ধরেছেন। হিন্দুস্তান টাইমসের সাবেক সম্পাদক ও খ্যাতিমান সাংবাদিক হিরণ¥য় কারলেকর লিখিত-বাংলাদেশ দ্য নেক্সট আফগানিস্তান গ্রন্থটিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যউপাত্ত আছে। অন্যদিকে আলোচিত কুশীলবদের বিকল্প উড়ে এসে জুড়ে বসা নূরী আল মালিকী বা হামিদ কারজাই মার্কা শাসকদের দ্বারা দেশ পরিচালনার পরিণতি কী হয় তার চরম উদাহরণ বর্তমানের ইরাক ও আফগানিস্তান। আওয়ামী লীগ ভার্সেস বিএনপির মধ্যে আদর্শ ও রাষ্ট্রীয় দর্শনগত কারণে রাজনীতিতে যে চরম বিভাজন তার সুযোগটাই নিতে চাইছে আলোচিত ওই কুশীলবরা। এই কুশীলবদের আসল উদ্দেশ্য বুঝতে চাইলে জন পার্কিন্স লিখিত- কনফেশন্স অব অ্যান ইকোনমিক হিটম্যান গ্রন্থটি পড়ে দেখার অনুরোধ করব। কুশীলবরা তাদের লক্ষ্য অর্জনে বহুবিধ টার্গেট নিয়ে কাজ করছে, যার মধ্যে তাদের এক নম্বর ও প্রধান টার্গেট নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত ও ব্যর্থ হলে তাদের জন্য আলীবাবা ও চল্লিশ চোরের ভাগ্য খুলে যাওয়ার মতো চিচিম ফাঁক হয়ে যায়। বিতর্কিত ও ব্যর্থ করার বিকল্প হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে সবোটেজ অর্থাৎ অন্তর্ঘাতী হওয়ার জালের মধ্যে ফেলতে পারলে কাজটি আরও সহজ হয়ে যায়। অন্তর্ঘাতী জালে আটকানোর জন্য কুশীলবদের হাতে অনেক লোভনীয় এবং একই সঙ্গে ভীতিকর অনেক অস্ত্র, টুলস ও উপাদান আছে, কনফেশন্স অব অ্যান ইকোনমিক হিটম্যান গ্রন্থের মধ্যে এর অনেক কিছু উল্লেখ আছে। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক লেগেসি এমনই যে, অতি বিশ্বাসী মানুষও অন্তর্ঘাতী হয়ে যায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বর্তমান আউয়াল কমিশন গঠিত হওয়ার পর থেকেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ওই কুশীলব গোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের পক্ষে প্রপাগান্ডা চালানোর জন্য দেশে-বিদেশে শক্তিশালী প্রপাগান্ডা মেশিন খুবই সক্রিয়। একই সঙ্গে বিএনপির মতো বড় এক রাজনৈতিক পক্ষ নির্বাচন কমিশনকে বয়কট ও বর্জনের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাতে নির্বাচন কমিশনের কাঁপাকাঁপির দৃশ্য ইতোমধ্যেই পরিলক্ষিত হয়েছে। মানুষ ভয় পেলে উত্তেজিত হয় এবং অসংলগ্ন-অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলে। এরকম কথাবার্তা বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারও ষড়ন্ত্রকারীদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন, যদিও এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে, বিএনপিকে নির্বাচনে আনা এখন যেন তাদের পবিত্র দায়িত্বে পরিণত হয়েছে অথচ এ কাজটি তাদের ম্যান্ডেটের মধ্যে পড়ে না। তারা হয়তো মনে করছেন বিগত সময়ে কমিশন বিএনপিকে আনতে পারেনি এবার অসাধ্যকে সাধন করে হিরো হয়ে যাবেন। কিন্তু হিরো হওয়ার আকাক্সক্ষায় যেন জিরোতে পরিণত না হয় তার জন্য তাদের বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক লিগেসিকে সর্বদা স্মরণে রাখা অপরিহার্য। এক বড় পক্ষের রাজনৈতিক চিন্তা, চেতনা নীতি-আদর্শের শেকড় নিহিত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের সংগ্রাম ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে যার সবকিছুর প্রাণপুরুষ বাঙালি জাতির মহানায়ক, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এসবের চরম বিপরীতে রয়েছে আরেক বড় পক্ষ, যারা এর সবকিছুকে শুধু প্রত্যাখ্যান নয়, তার প্রতি চরম বিদ্বেষ ও ঘৃণা পোষণ করে। তারা জাতির পিতা মানে না, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সরকারকে স্বীকার করে না, অনন্য ঐতিহাসিক দলিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে মর্যাদা দেয় না। দেশের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের ঐক্যবদ্ধতায় তৈরি বাহাত্তরের সংবিধানকে শুধু ছুড়ে ফেলে দেওয়া নয়, পারলে পদদলিত করে। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত নিয়ে তাদের দলের কিছু সিনিয়র নেতা বিগত সময়ে অমর্যাদাকর কথাও বলেছে। এসব কারণেই বাংলাদেশের বৃহত্তর মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন নিয়ে বিএনপি কখনো রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারেনি। জিয়াউর রহমান জাতির পিতার স্বঘোষিত খুনিদের পুরস্কৃত করে ক্ষমতায় বসেছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অতি আত্মবিশ্বাসে ঘুমিয়ে থাকায় পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের টাকা ও নির্দেশ পেয়ে জামায়াত শেষ মুহূর্তে গোপন সমর্থন প্রদান করায় সামান্য ব্যবধানে সেবার বিএনপি জয়ী হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনটি এখন সালসা নির্বাচন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিষয়টি এখন আর গোপন কিছু নয়। ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে নির্ধারিত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে বিএনপি শতভাগ নিশ্চয়তার চেষ্টা নয়, অপচেষ্টা করার কারণেই উল্লিখিত নিরপেক্ষ কুশীলবরা ২০০৭-২০০৮ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে প্রথমে বিএনপি অংশ নিতে চায়নি; কিন্তু দেশি-বিদেশি পরিস্থিতির চাপে অংশগ্রহণে বাধ্য হয় এবং ভূমিধস পরাজয়বরণ করে। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিএনপি জয়ী হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহাতীতভাবে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বয়কট ও প্রতিহত করার মতো রাজনৈতিক আত্মহননের পথ বেছে নেয় এবং তাতে আম-ছালা দুটোই হাতছাড়া হয়ে যায়। ২০১৮ সালে এসে বিএনপির উপলব্ধি ঘটে পাঞ্জাব মেইল কারও জন্য অপেক্ষা করে না। সুতরাং ২০১৮ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং চরম আত্মবিশ্বাসহীনতায় এঘাট-সেঘাট করতে থাকে। তাতে একবার ড. কামাল হোসেন তো আরেকবার জামায়াতের কাছে আত্মসমর্পণ করে সব কূল হারায়। অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় জয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিএনপি কখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়নি, আগামীতেও চাইবে না। বিএনপি এখনো পথের সন্ধানে আছে।

অন্যদিকে প্রবন্ধের ভিতরে উল্লিখিত নিরপেক্ষ কুশীলবরা দেশি-বিদেশি চাপ প্রয়োগ ও প্রপাগান্ডার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে ট্যাপে ফেলে অন্তর্ঘাতী পথে টেনে আনার বহুমুখী অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি গাইবান্ধা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে যা ঘটেছে এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ক্ষমতা প্রদর্শনের যে ব্যাকুলতা দেখা গেছে তাতে অনেকেরই সন্দেহ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন কি তাদের পাতা ফাঁদের পা দিয়ে অন্তর্ঘাতী হয়ে গেল কিনা। গত ৮ অক্টোবর ৬৪ জেলার ডিসি-এসপিদের নির্বাচন কমিশনে ডেকে এনে রীতিমতো ধোলাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। হাটবাজার, রাস্তাঘাটে যেসব কথা হয় তার সূত্র ধরে ঢালাওভাবে সব ডিসি-এসপির বিরুদ্ধে অসততা ও অনৈতিকতার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অভিযুক্ত করেছেন, যা সম্পূর্ণ অশোভন এবং বেআইনি। আইনের ডিউ প্রসেসের মাধ্যমে নিঃসন্দেহভাবে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে অপরাধী বলা যায় না। অথচ এমন কাজই করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার ৮ অক্টোবরের সেই সভায়। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতায় যত ভালোভাবে কার্যসাধন হয়, ক্ষমতার ঔদ্ধত্য ব্যবহারে তা কখনো হয় না। গাইবান্ধা উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত আইনি ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু মিশন অর্জনে অর্থাৎ নির্বাচন সুসম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মিশন অর্জনে ব্যর্থ হলে ক্ষমতার কোনো মূল্য থাকে না। মিশন অর্জনে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনকে কিছু ব্যক্তি ও পক্ষ বাহবা দিচ্ছে। একে বলা হয় অভিরুচির চরম বিপর্যয়। এটি এখন এক সামাজিক ব্যাধি। বক্তব্য, বক্তৃতা অত্যন্ত যুক্তি ও তথ্য-উপাত্তসহ শালীন ভাষায় উপস্থাপন করা হলে সেটি পানসে মনে হয়, আর প্রতিপক্ষকে কষে গালিগালাজ এবং উচ্চৈঃস্বরে হুমকি-ধমকি দিলে হাতের তালি পাওয়া যায়। ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া অতি সহজ কাজ। এর মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। প্রাতিষ্ঠানিক সব কাজের একটি নির্দিষ্ট ডিউ প্রসেস রয়েছে, যেখানে স্টেপ বাই স্টেপ সবকিছু করার কথা। সেই পদ্ধতির টপডাউন অথবা বটম আপ, কোনোটাই গাইবান্ধা উপনির্বাচন বন্ধে অনুসরণ করা হয়নি। ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় বুথের ভিতর প্রত্যাশিত লোক দেখার পর ডিসি, এসপি, রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, তাদের কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে ওইসব ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার হুকুম না দিয়ে, অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের হুকুম না দিয়ে সরাসরি সম্পূর্ণ নির্বাচনটি যখন বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন তাতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন নয়, বরং তা বাতিল করে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনই ছিল নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে বড় আস্থার সংকট তৈরি হলো, যা ভবিষ্যতে আরও প্রকট হবে। দ্বিতীয়ত, বিএনপির হাতে একটা মোক্ষম অস্ত্র তুলে দেওয়া হলো এই মর্মে যে, বর্তমান সরকারের প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এসবের মধ্য দিয়ে দেশকে একটা সাংবিধানিক সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। তাতে প্রবল সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক যে, নির্বাচন কমিশন কি অন্তর্ঘাতী পথে চলে গেল কি না। আর যদি নিজেদের অদূরদর্শিতার কারণে গাইবান্ধার উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাহলে সেটা অন্য কথা।

 

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর