বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যে আগুন

কেড়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের স্বস্তি

নিত্যপণ্যে মূল্যবৃদ্ধির আগুনে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে। চাল, আটা, তেল, ডাল, চিনি প্রতিটি পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। মাছের গায়ে হাত দেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। গরুর মাংসের দাম বাংলাদেশে ঊর্ধ্বগতির বিশ্বরেকর্ড ছুঁতে যাচ্ছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে পণ্যের মূল্য সবচেয়ে বেশি। আধা পাউন্ড পাউরুটির দাম পাকিস্তানে ৪৫, ভারত ও নেপালে ৪৮, শ্রীলঙ্কায় ৫০ টাকা। অথচ বাংলাদেশে ৬২ টাকা। এ ছাড়া দেশে বর্তমানে ১ কেজি গরুর মাংস কিনতে গুনতে হয় অন্তত ৬৮৪ টাকা, যা দক্ষিণ এশিয়ার এ অঞ্চলে সর্বোচ্চ। বিশ্বব্যাপী গরুর মাংসের গড় দাম ৫৪৯ টাকা। চলতি অক্টোবরে মাছ-মাংস না খেয়েও ঢাকা শহরের চার সদস্যের একটি পরিবারের খাবার কিনতে মাসিক খরচ গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। মাছ-মাংস খেলে খরচ হয় ২২ হাজার ৪২১ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা শহরের একটি পরিবার মাছ-মাংস খেলে খাবারে খরচ হতো ১৭ হাজার ৫৩০ টাকা। আর মাছ-মাংস না খেলে এ খরচ ছিল ৬ হাজার ৫৪১ টাকা। চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ভয়াবহ সমস্যায় পড়েছে। গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২২-এ বাংলাদেশকে খাদ্য সংকটে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির চাপে অনেক মানুষই এখন সঞ্চয় ভেঙে খাওয়া শুরু করেছেন। নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রিও কমে গেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সঞ্চয়পত্র বিক্রির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে মাত্র ৮ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। গত বছরের আগস্টে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ গত এক যুগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়নের কৃতিত্ব দেখিয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সাফল্য দেখিয়েছে। কিন্তু হঠাৎই চলতি বছর মূল্যস্ফীতির যে ভয়াল দৈত্য থাবা বিস্তার করছে তা দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর