বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে অন্তত ১০টি দেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে। হাই কোর্টে দাখিলকৃত বিএফআইইউর প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। অর্থ পাচারের প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য সহায়তা গ্রহণে এরকম চুক্তি দরকার এমন পরামর্শই দেওয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। বিএফআইইউ যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি করার পরামর্শ দিয়েছে সেই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, হংকং-চীন ও থাইল্যান্ড। স্মর্তব্য, ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সূত্র ধরে ১১ আগস্ট বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি- তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন হাই কোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় আদালতে দুদক ও বিএফআইইউর পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ হলফনামা আকারে তথ্য দাখিল করে। ওই হলফনামায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বিএফআইইউ-প্রধানকে আদালতে তলব করা হয়। ক্ষমা চাইলে আদালত তাকে সতর্ক করেন এবং বলেন, ভারত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে ৭৮৪ জনের টাকা ফেরত এনেছে। ভারত পারলে আমরা কেন পারব না? এ ব্যাপারে বিএফআইইউ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৬ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন হাই কোর্ট। এ আদেশ অনুসারে মঙ্গলবার বিএফআইইউ প্রতিবেদন দাখিল করে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। কিছু দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকের জন্য দেশের অর্থনীতি রুগ্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পাচারকারী ও তাদের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক।