শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সুন্দরবন সুরক্ষা

আমাদের অস্তিত্বের জন্যই দরকার

সুন্দরবন আবারও নিজের বুক চিতিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা। ২৪ অক্টোবর সিত্রাং ভয়ালমূর্তিতে বাংলাদেশের উপকূলভাগে আঘাত হানলেও সুন্দরবন ডিঙিয়ে লোকালয়ে পৌঁছানোর আগেই তার গতি অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়ে। সিত্রাং প্রবল বেগে আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসও আসে তার সঙ্গী হয়ে। কিন্তু বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন ১৮ কোটি মানুষের প্রতি দায় অনুভব করে অতীতের মতোই রুখে দাঁড়ায় সিত্রাং নামের দানবের বিরুদ্ধে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার কথা ছিল। কিন্তু যখন ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করে তখনই এর

গতিবেগ কমে যায়। সুন্দরবনে প্রায় ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার গাছপালার ‘শেল্টার বেল্ট’-এ বাধাগ্রস্ত হয়ে বাতাসের গতি কমে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ জনপদে ক্ষতি কম হয়েছে। এদিকে দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিকায়ন করার এবং ‘প্রাকৃতিক ঢাল’ সুন্দরবন রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বন গবেষক  ও ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বনাঞ্চল যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অর্জন থাকলেও ঘাটতির নানা দিক রয়েছে। তাই আত্মতুষ্টির ঢেঁকুর না তুলে সুন্দরবন রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। সুন্দরবন শুধু ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাংলাদেশের উপকূলভাগ রক্ষা করছে তা নয়, এ বিশাল বন এ অঞ্চলের ফুসফুস হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থেই এ বাদাবনকে বাঁচিয়ে রাখা কর্তব্য হলেও আমরা কতটা সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছি তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। এ অকৃতজ্ঞ অবস্থান থেকে সরে এসে সুন্দরবন রক্ষায় সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর