বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য সুসংবাদ

আবদুর রশিদ

বাংলাদেশকে বলা হয় পীর-আউলিয়া -দরবেশদের দেশ। বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের শুরু সাহাবিদের আমলে। তারা মানুষের অন্তর জয় করেছেন ভালোবাসা দিয়ে। হজরত শাহজালাল (রহ.), খানজাহান আলী, শাহ পরান, বায়েজিদ বোস্তামি, শাহ মখদুম, শাহ আলী বোগদাদিসহ অসংখ্য আউলিয়া-দরবেশের সাহচার্যে এ দেশে ইসলাম প্রচার হয়েছে। তাঁরা আল্লাহর দীন এ দেশে প্রতিষ্ঠা করেছেন ইসলামের প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের আলোচনায় পবিত্র কালামে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘খবরদার! নিশ্চয় আল্লাহর প্রিয়জনদের কোনো ভয় নেই, না তারা চিন্তিত হবে। যারা ইমান এনেছে এবং যারা ভয় করে (আল্লাহকে)। তাদের জন্য রয়েছে ইহকাল ও পরকালে সুসংবাদ। আল্লাহর কথার কোনো ব্যত্যয় ঘটে না। এটাই মহাসাফল্য।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত ৬৪-৬৫) প্রকাশ থাকে যে, এখানে আল্লাহ তাঁর ওলি বা বন্ধুদের পরিচয়ে আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, যারা ইমানদার হবে, আল্লাহকে ভয় করবে তারাই হচ্ছেন আল্লাহর ওলি বা বন্ধু। তবে প্রথম শর্ত হলো যারা ইমানদার বা নির্ভেজাল আল্লাহবিশ্বাসী হবে তারা ওলি হতে পারবেন যদি আল্লাহকে যথাযথ ভয় করেন। তাদের ভয় ও চিন্তা নেই, এ বাক্যের তাফসিরে ইবনে কাসির বলেন, আখেরাতে তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং দুনিয়ায় কোনো সম্পদ না পাওয়ার বেদনায় তারা ব্যথাতুর হবে না। তবে অন্যান্য মুফাসসির বলেন, দুনিয়া ও আখেরাতে কোথাও তাদের কোনো ভয় ও চিন্তা নেই। কারণ তারা আল্লাহর উদ্দেশে কাউকে ভালোবাসেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কারও সঙ্গে দুশমনি রাখেন। বুখারির এক হাদিসে আছে, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বলেন যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে শত্রুতা করবে আমি তার সঙ্গে অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। যেসব বস্তু দ্বারা বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করে তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রিয় বস্তু হলো ফরজগুলো। আর বান্দা বরাবরই তার নফল বা অতিরিক্ত কাজের মাধ্যমে আমার নৈকট্য অর্জন করে থাকে। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে এতটাই ভালোবাসি যে, আমি তার কান হয়ে যাই যে কান দ্বারা সে শোনে। আর আমি তার চোখ হয়ে যাই যে চোখ দ্বারা সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই যে হাত দ্বারা সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই যে পা দ্বারা সে চলে। আর যদি সে আমার কাছে কোনো আবদার করে আমি অবশ্যই তা রক্ষা করি। যদি সে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় প্রদান করি।’

আল্লাহ তার হাত-পা হয়ে যাওয়ার অর্থ হাকিকি অঙ্গ হওয়া নয়, বরং এ কথা দ্বারা মোমিন-মোত্তাকি ব্যক্তিটি আল্লাহর মহব্বতের আতিশয্যে এতটাই উন্নীত হয়ে যায় যে, তার হাত, পা, চোখ, কান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্বারা কৃত কার্যাদিকে আল্লাহর নির্দেশিত কর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া-ই উদ্দেশ্য।

লেখক :  ইসলামবিষয়ক গবেষক

সর্বশেষ খবর