বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চা উৎপাদন

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া উদ্বেগজনক

পর পর দুই বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঢের বেশি চা উৎপাদন হলেও বিদায়ী বছরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালে ঠিক কী পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে, তার পরিপূর্ণ হিসাব পাওয়া না গেলেও নভেম্বর পর্যন্ত হিসাবে অনুমান করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ লাখ কেজিরও বেশি চা কম উৎপাদিত হবে। অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও চা উৎপাদনের টপপিক মুহূর্তে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে চা খাত। সরকারের হস্তক্ষেপে ধর্মঘটের অবসান ঘটলেও ক্ষতি যে এড়ানো যায়নি, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া তারই প্রমাণ। ২০২০ সালে দেশের ১৬৭টি চা-বাগান থেকে ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হয় ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি চা। ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি, উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৬ হাজার কেজি চা। সদ্যসমাপ্ত ২০২২ সালে ১০ কোটি কেজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। নভেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা। এই হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে ১ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার কেজি, ২০২১ সালে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৬ হাজার কেজি চা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়। কিন্তু ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা কম উৎপাদন হয়েছে। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বছরের সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়। এই তিন মাসকে ‘টপপিক’ হিসেবে ধরা হয়। শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য ওই সময়কে বেছে নেওয়ায় ব্যাহত হয়েছে উৎপাদন প্রক্রিয়া। চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও মোট উৎপাদন আগের বছরের কাছাকাছি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর চা ছিল বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। গত পাঁচ দশকে চা উৎপাদন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও এর বিপরীতে অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় চা রপ্তানির পরিমাণ এখন একেবারে নগণ্য। রপ্তানি ক্ষেত্রে আগের অবস্থা ফিরে পেতে উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর