রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আর্সেনিক দূষণ

দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি

বাংলাদেশকে বলা হয় মিঠা মাটির ভাণ্ডার। তারপরও এ দেশে নিরাপদ পানির অভাব কম নয়। দেশের বিপুলসংখ্যক নলকূপের পানিতে রয়েছে আর্সেনিক দূষণ। যাদের শরীরে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া ধরা পড়ে, তাদের ‘আর্সেনিকোসিস’ রোগী বলা হয়। দেশে আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বা তাদের চিকিৎসা নিয়ে হালনাগাদ কোনো তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের ২০১৯ সালের গুচ্ছ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১১.৮ ভাগ অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে। আর্সেনিকের বিষ থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ রাখতে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো ‘পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটিতে ৫৪ জেলায় মোট ১ কোটি ৬০ লাখ নলকূপ পরীক্ষা করা হয় এবং নলকূপে আর্সেনিক ধরা পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক রয়েছে গোপালগঞ্জ জেলায়। যেখানে আর্সেনিকের পরিমাণ ৫৩ ভাগ। আর্সেনিকের পরিমাণ গড়ে ৩০ ভাগের বেশি পাওয়া জেলাগুলো হলো- চাঁদপুর ৪৮, সাতক্ষীরা ৪৩, কুমিল্লা ৪০, লক্ষ্মীপুর ৩৯, বাগেরহাট ৩৫ ও মাদারীপুরে ৩২ ভাগ নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে। আর কক্সবাজার ও দিনাজপুরে আর্সেনিক নেই। সবচেয়ে কম আর্সেনিকযুক্ত নলকূপ রয়েছে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নওগাঁ, নাটোর ও রংপুরে। গত পাঁচ বছরে দেশের ৫৪টি জেলায় ১ লাখ ৬৬ হাজার নলকূপের আর্সেনিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এসব নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ধরা পড়েছে গড়ে ১৩ ভাগ। আর ২০০৩ সালে ২৯ ভাগ নলকূপে আর্সেনিক পাওয়া যায়। গত ২০ বছরে নলকূপে আর্সেনিকের পরিমাণ কমেছে ৫০ ভাগের বেশি। আর্সেনিক দূষণ রোধের জন্য যেসব নলকূপে আর্সেনিকের মাত্রাতিরিক্ত দূষণ প্রমাণিত হয় সেগুলো সিলগালা করে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ যাতে নিরাপদ পানি পান করতে পারে সেজন্য নতুন নলকূপ খনন করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর