শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি

জনস্বাস্থ্যের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে

ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনার কারণ শুধু নয়, জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রিকশা ও ইজিবাইকে ব্যবহৃত লেড অ্যাসিড ব্যাটারির ক্ষতিকর সিসা নানাভাবে পরিবেশ দূষিত করছে। বিশেষত শিশুদের জন্য তা নীরব ঘাতকের ভূমিকা পালন করছে। এ ব্যাটারি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়লে তা যেখানে-সেখানে ফেলা হয় এবং সেগুলোর সিসা মাটি বিষাক্ত করছে। সে মাটিতে উৎপাদিত ফসল মানুষের শরীরে বিষক্রিয়ার বিস্তার ঘটাচ্ছে। আইসিডিডিআরবি ও আইইডিসিআরের এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু বাংলাদেশেই সাড়ে ৩ কোটি শিশুর রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা আছে বা তারা সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। অর্থাৎ দেশের শতভাগ শিশুর শরীরে সিসার উপস্থিতি দেখা গেছে। ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স ইভ্যালুয়েশনের মতে, সিসার কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বিশ্বে চতুর্থ। সিসা দূষণের কারণে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে, যার মধ্যে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয় তুলনামূলকভাবে মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। সে কারণে পরিবেশবাদীরা সিসাকে ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিসাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম ক্ষতিকারক উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সিসা বাংলাদেশের মাটি, পানি, বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। স্বল্পমূল্যের ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যবহার সারা দেশে শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে তা-ই নয়, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে পুরনো লেড অ্যাসিড ব্যাটারি আমদানিতে আপত্তি জানিয়েছে। স্মর্তব্য, লেড অ্যাসিড ব্যাটারি পুরনো ব্যাটারি রিসাইক্লিং করে এবং ফেলে দেওয়া ধাতু থেকে তৈরি করা হয়। পুরনো ব্যাটারি গলিয়ে যে সিসা পাওয়া যায় তা নতুন ব্যাটারি তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নিজেদের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় উন্নত দেশগুলো তাদের ব্যবহৃত বাতিল ব্যাটারি গরিব দেশগুলোতে পাঠিয়ে দেয়।

সর্বশেষ খবর