সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকার বায়ুদূষণ

লজ্জাজনক অবস্থানের ইতি ঘটুক

যানজটের শহর ঢাকা এখন একই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বায়ুদূষণের শহর। এ নিন্দনীয় শিরোপা জুটেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকিউ এয়ারের পরিমাপে। গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার বায়ুদূূষণে ঢাকার আশপাশেও ছিল না বিশ্বের কোনো শহর। শনিবার বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় টানা তৃতীয় দিন শীর্ষস্থানে ছিল ঢাকা। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সকালে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) যথাক্রমে ১৯৩ ও ২৩৬ স্কোর নিয়ে ঢাকা ছিল সবচেয়ে দূষিত নগরী। শনিবার সকালে বাতাসের মান আরও অবনতি হয়ে তা ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে পৌঁছায়। সকাল ৭টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর দাঁড়ায় ৪৪৫-এ। এ সময় প্রতি ঘনমিটার বাতাসে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা পিএম-২.৫ ছিল ৪১৭.৬ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার চেয়ে ৮৩ গুণ বেশি। বায়ুদূষণ পরিমাপকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকিউ এয়ারের তথ্য অনুসারে, শনিবার সকাল ৯টায় দূষণ কিছুটা কমে একিউআই স্কোর ৩৭০-এ নামলেও ঢাকা ছিল বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর নগরী। ঢাকার পরে ছিল ভারতের দিল্লি, মুম্বাই ও চীনের বেইজিং। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে ভালো বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সহনশীল, ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ থেকে দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এ অবস্থা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ফলে শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভিতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা থেকে শনিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকার বাতাস ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। বাংলাদেশে উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরে বায়ুদূষণে প্রাণ হারাচ্ছেন ৭৮ থেকে ৮৮ হাজার মানুষ। এ কারণে শ্বাসকষ্ট, কাশি, শ্বাসনালির সংক্রমণ ও বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ছে। যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা রোধে সক্রিয় হতে হবে। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তাদের সততা নিশ্চিত করাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর