সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি সংসদের নির্বাচন

শফিকুল বাহার মজুমদার টিপু

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি সংসদের নির্বাচন

আজ বঙ্গবন্ধুর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ   এর ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কাজ শুরু করে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংগঠনটি ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যে সময় যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তাদের তল্পিবাহক হয়ে কাজ করে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আজকের প্রধানমন্ত্রী তখনকার বিরোধী দলের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পরামর্শ ও সহযোগিতায় রাজপথে পৃথক সংসদ পরিচালিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বাতিলসহ নানা দাবিতে মাঠে ময়দানে সরব ছিলেন। মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করে ট্রাকের ওপর মঞ্চ বানিয়ে সে সমাবেশে নেত্রীও বক্তব্য রাখেন। সার্বিক সহায়তা করেন জাতীয় নেতা আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মেয়র হানিফ ভাই। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরীকে সংসদের দায়িত্ব দিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন, মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন, ভাতা চালু, সন্তানদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করেন। এক কথায় বলতে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কল্যাণকর যা করার তার সবই করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ জন্য মুক্তিযোদ্ধারাও তাঁর সঙ্গে আছেন এবং আমৃত্যু থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাণের দাবি- গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচনের ব্যবস্থা করার। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০১ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী সব মুক্তিযোদ্ধার ভোটে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন। নভেম্বরে বিএনপি- জামায়াতের শাসনামলে ২৩ নভেম্বর সংসদ জবরদখল করে নেওয়া হয়। তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী নিন্দা জানান। সংবাদপত্রে বিবৃতি প্রদান করেন। রাজপথে তখন নেত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যাপ্টেন তাজের নেতৃত্বে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে আওয়ামী লীগকেও পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতায় আনার জন্য আমরা কাজ করি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১০ সালে সব বীর মুক্তিযোদ্ধার ভোটে একসঙ্গে কেন্দ্রীয় কমান্ড, জেলা কমান্ড ও উপজেলা কমান্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজ সাহেবের মাধ্যমে, বীর নিবাস নির্মাণ, জেলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ, সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করেন। দুর্ভাগ্য ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। বিতর্কিত ফলাফলের কারণে প্রত্যাখ্যান করা হয়। ২০১৭ সালে এ কমিটিকে অব্যাহতি দিয়ে কেন্দ্রে জেলা- উপজেলায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিলেও প্রায় ছয় বছর নির্বাচন হয়নি। সব মুক্তিযোদ্ধার প্রাণের দাবি অবিলম্বে অবাধ নিরপেক্ষভাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন চাই। গুটিকয় ছাড়া সব মুক্তিযোদ্ধা এখন আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় নির্বাচনের আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যের বিকল্প নেই। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আজ ঐক্যবদ্ধ।

 লেখক : সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল

সর্বশেষ খবর