বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকা নগর পরিবহন

প্রহসনের আরেক নাম

শিব গড়তে গিয়ে বানর গড়া একটি বহুল প্রচলিত প্রবচন। রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকঢোল পিটিয়ে যে ঢাকা নগর পরিবহন গড়ে তোলা হয়েছিল সেটি ওই প্রবচনের উদাহরণে পরিণত হয়েছে। ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর চালু হয় ঢাকা নগর পরিবহনের ২১ নম্বর রুট। পরবর্তীতে ২২ ও ২৬ নম্বর রুট চালু করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এসব রুটে শুধু ঢাকা নগর পরিবহনের গাড়ি চলাচল করবে। থাকবে বাস স্টপেজ ও টিকিট কাউন্টার। এসবের কোনো নিয়মই মানছে না ঢাকা নগর পরিবহন। অন্য পরিবহনের মতো যত্রতত্র ওঠানামা করছে যাত্রী, নির্দিষ্ট স্টপেজে থামছে না বাস। ইতোমধ্যে অধিকাংশ কাউন্টার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ২১ নম্বর রুটে ৫০টি বাস দিয়ে যাত্রা হয়েছিল। এর মধ্যে বিআরটিসির ৩০ ও ট্রান্সসিলভা পরিবহনের ২০টি। ওই সময় বলা হয়েছিল, এ রুটে ক্রমান্বয়ে ১০০ বাস নামবে। কিন্তু বাস না বেড়ে উল্টো কমেছে। এখন বিআরটিসির ৩০টি বাস চললেও ট্রান্সসিলভার চলছে আটটি। এসব পরিবহনেও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাস থামছে না। বিআরটিসি বাসে সহকারী না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ২২ নম্বর রুটের অবস্থা আরও ভয়াবহ। এ রুটের বাস চালাচ্ছে হানিফ পরিবহন। ৫০টি বাস দিয়ে যাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৩০টি বাস পাওয়া যায়। শুরুতে টিকিট কাউন্টার থাকলেও পরে তা কমিয়ে দেওয়া হয়। যত্রতত্র বাস থামছে ও যাত্রী ওঠানামা করছে। বাসের সহকারীদের ডেকে ডেকে যাত্রী তুলতে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে এ পরিবহনের বাস নির্দিষ্ট স্থানের আগে যাত্রী নামিয়ে বাস ঘুরিয়ে অন্য রুট দিয়ে চলে যায়। ২৬ নম্বর রুটে বিআরটিসির ৫০টি ডবল ডেকার বাস দেওয়ার কথা থাকলেও বাস চলছে ২৫টি। বাণিজ্য মেলা শুরুর পর বিআরটিসির কয়েকটি বাস ওই রুটে চলেছে।  বাণিজ্য মেলা শেষ হওয়ায় সেগুলো ফিরে এলেও টিকিট ছাড়া যাত্রী তোলার অভিযোগ রয়েছে চালকদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট রুটগুলোতে অবৈধভাবে অন্য পরিবহনের বাস চলাচল করায় নগর পরিবহনের বাসও কোনো নিয়ম মানছে না। শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় নজর না থাকায় ঢাকা নগর পরিবহন প্রহসনে পরিণত হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর