রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঊষর উচ্চশিক্ষা

আলম রায়হান

ঊষর উচ্চশিক্ষা

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ অঞ্চলে উন্মোচিত হয় উচ্চশিক্ষার দ্বার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্ব ছিল কেবল পরীক্ষা নেওয়া। বিচারকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের একজন বিচারক ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করতেন। এর প্রায় ৬৪ বছর পর ১৯২১-এ প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শর্ত ছিল, শিক্ষকদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ছাত্ররা আবাসিক হলে থেকে লেখাপড়া করবে। তখন উচ্চশিক্ষার চূড়াটি ছিল ছোট।  পিরামিডের চূড়ার মতো। স্বাধীন বাংলাদেশে শুরুতে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ হাতেগোনা চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। পরে বহুসংখ্যক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি ও সন্দেহ মুখে মুখে। কেউ কেউ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলছেন, সনদ বিক্রির ‘হোলসেল দোকান’। ফলে উচ্চশিক্ষার পিরামিড যেন উল্টো গেছে। যার নিচে পড়ে দেশের হাপিত্যেশ অবস্থা। যেন প্রাণ যায় জাতির!

অথচ জানা কথা, যে কোনো জাতির জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ঘটে উচ্চশিক্ষার হাত ধরে। উচ্চশিক্ষা নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে জ্ঞানের আলোয় জাতিকে উদ্ভাসিত করে। কিন্তু আমাদের দেশে এ উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা অনেক সমস্যার জালে আটকে আছে। আর এ নিয়ে কথামালার শেষ নেই। এর মধ্যে কিছু বিষয় আছে আবার সিজনাল। যেমন পরীক্ষার আগে কোচিংয়ের বিরুদ্ধে বুলন্দ আওয়াজ, এসএসসি-এইচএসসির পাস-ফেল নিয়ে জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষণ, বছরের শুরুতে শিশুদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়ার সাফল্যে বগল বাজানো ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তোলার মতো অবস্থা হয়। তবে এবার নতুন পাঠ্যক্রমের বই নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছে। এ নিয়ে চায়ের কাপে কেবল ঝড় নয়, যেন সুনামি চলেছে। প্রথমে নানান তরিকায় কথা বললেও ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য প্রণীত ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ নামে বই দুটি পাঠদান থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। এর আগে এসব প্রসঙ্গ নিয়ে বোদ্ধা সমালোচক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিন্দুকেরা যত কথা বলেছেন তার চেয়ে অনেক বেশি বলেছেন আমাদের বাকপটু শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ যেন ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’ দশা। এই চলছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। একেক সময় শিক্ষা নিয়ে শুরু হয় আলাপ-আলোচনা-কথাবার্তা-তর্ক-বিতর্ক। শুরু হলে আর যেন থামে না। কিন্তু অনুধাবন করার চেষ্টা করা হয় না, ঊষর শিক্ষাব্যবস্থার কারণে এরই মধ্যে কতটা ধূসর হয়ে গেছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। এ যেন আল মাহমুদের কবিতার প্রতিফলন, ‘নদীগুলো দুঃখময়, নির্গত মাটিতে জন্মায়/ কেবল ব্যাঙের ছাতা, অন্য কোন শ্যামলতা নেই।’ এটিই হচ্ছে জাতির মূল সমস্যা। কিন্তু বিষয়টি নানান ডামাডোলের মধ্যে অনেকটা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। নানান অঘটনের কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার বিষয়টি প্রায়ই আলোচনায় আসে। কিন্তু উচ্চশিক্ষার বিষয়টি রয়ে যায় অনেকটা অন্তরালেই। যেন মেঘে ঢাকা তারা। আর উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গ এলে সাধারণভাবে দৃশ্যপটে ভেসে ওঠে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ মাত্র ৩০ শতাংশ। বাকি ৭০ শতাংশ কলেজগুলোর এখতিয়ারে। দেশে ২ হাজার ২৫৭টি কলেজ রয়েছে। যা নিয়ন্ত্রিত হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে, সেখানে কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষার দশা গ্রহণযোগ্য মাত্রায় থাকবে তা আশা করা বোধগম্য কারণেই সংগত নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা ওপেন সিক্রেট। আর দেশের বিশ্ববিদ্যায়গুলো জ্ঞানী ও দক্ষ শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয় তা বলা কঠিন। বরং উল্টো চিত্র প্রমাণিত। আর প্রধানত ক্ষমতাসীনদের প্রতি অখন্ড আনুগত্যই ভিসি ও অন্য ভাইটাল পোস্টে নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান যোগ্যতা। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমাত্র যোগ্যতা। আর কেবল নিয়োগ পাওয়া নয়, টিকে থাকতেও তাদের প্রতিনিয়ত আনুগত্যের প্রমাণ দিতে হয়। অনেকটা সতিত্বের পরীক্ষা দেওয়ার মতো। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় চলছে অকার্যকর প্রশাসন ব্যবস্থায়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিদের অনেকেরই দশা হয়েছে সার্কাসে খেলা দেখানো সিংহের মতো। দেখতে-শুনতে শিক্ষক। কিন্তু চলন-বলন-আচরণে অনেকেই অনুগত চাপরাশির মতো। এই হচ্ছে রাষ্ট্রের টাকায় চলা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দশা। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কী দশা তা তো সবাই জানেন। মাত্র কয়েকটি ছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সার্টিফিকেট বিক্রির ‘দোকান’। ব্যবধান হচ্ছে প্রচলিত মুদি দোকানগুলো বিভিন্ন স্থান থেকে দ্রব্য এনে খদ্দেরের কাছে বিক্রি করে, আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বিক্রি করে তা তৈরি করে নিজেই। এ জন্য খরচ সামান্যই। ফলে লাভের পরিমাণ এতই ফুলেফেঁপে উঠেছে যে, এক সময়ের আদম ব্যাপারিও হয়ে গেছেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা।

এদিকে উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণকারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা নিয়ে না হয় প্রশ্ন না-ই বা তোলা হলো। কিন্তু যে কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষা দেওয়া হয় সেগুলোর কী অবস্থা? আর সেখানে যারা পড়ান তারা কারা? ২০১৫ সালে এনটিআরসিএ-এর মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন তাদের মান সম্পর্কে একটু ধারণা করা মোটেই কঠিন নয়। আর এরা উচ্চশিক্ষার জমিনে আগাছা চাষ করতে থাকবে আরও অন্তত ৩০ বছর। কারণ অযোগ্য চাষি আর যাই হোক শস্য ফলাতে পারেন না। ফলে যা জন্মায় তা কেবল আগাছাই হয়। আবার সরকারি তত্ত্বাবধানে যেসব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তা যে মানসম্মত, তাও একবাক্যে বলা যাবে না। এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষকদের চাষি ধরা হলে বীজ হচ্ছে ছাত্ররা। কিন্তু এ বীজের হাল কী? অল্প সংখ্যক ছাড়া বাকিরা বপনের অযোগ্য। তবু এরা উচ্চশিক্ষার জমিনে প্লাবনের জলে ভেসে আসে। এদের কেউ বাবার বিপুল টাকার শ্রাদ্ধ করে। এরা পড়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর বাকিরা উচ্চশিক্ষার নামে নিজের এবং রাষ্ট্রের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় শিক্ষানীতির ভ্রান্তির কারণে। সুযোগ যেভাবেই পান, উচ্চশিক্ষার কারখানা থেকে একটি ডিগ্রি লাভ করতে তেমন কোনোই বেগ পেতে হয় না। এদিকে উচ্চশিক্ষার অঘোষিত লক্ষ্যই থাকে একটি চাকরি লাভ করা। আর চাকরি মানে এখন সরকারি চাকরি। যারা বিসিএস পরীক্ষা লক্ষ্য করে আগান তারা লেখাপড়া করেন নিজের গরজে। কিন্তু যাদের এ উদ্দেশ্য নেই তাদের লক্ষ্য কেবলই সার্টিফিকেট অর্জন। এর বেশি কিছু নয়। কারণ তারা জানে সার্টিফিকেট তাকে কেবল আবেদন করার যোগ্যতা দেবে। কিন্তু প্রাপ্তির জন্য ভরসা নগদ নারায়ণ। এ ক্ষেত্রে আগের মামা-খালুর কার্যকারিতাও যেন হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে লেখাপড়ার আর কী দরকার এমন মানসিকতায় অনেককে পেয়ে বসেছে। কিন্তু ট্যাঁকের জোরে যখন না কুলায় তখন এমন চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করে যা প্রাপ্তির জন্য আগের যোগ্য ছিল অষ্টম শ্রেণি পাস। আর এখন এসএসসি হলেই চলে। তবে এখন এখানেও রেট অনুসারে টাকা বিনিয়োগ করতে হয়।

সামগ্রিক অবস্থায় কলেজে ৭০ শতাংশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ শতাংশ মিলিয়ে উচ্চশিক্ষার আসল চিত্রটি কী দাঁড়িয়েছে? আশা করি সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। আর অনুমানই বা করতে হবে কেন? খোদ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিই তো ২ ফেব্রুয়ারি মহান জাতীয় সংসদে বলেছেন, ‘আমরা যত্রতত্র অনার্স খুলেছি। সেটি জনপ্রতিনিধিদের আগ্রহেই হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীও অনার্স মানের নয়। শিক্ষকও হয়তো অনার্স মানের নয়, কিন্তু আমরা খুলেছি।’ দেশে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘সম্প্রতি স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এখন পর্যন্ত নিজেদের কোনো স্থান নেই। কাজই শুরু হয়নি। তার বাইরেও কিছু আছে একেবারে নতুন তৈরি হয়েছে। সেখানে শুধু উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ছাড়া অধ্যাপক পদমর্যাদার আর কেউ নেই। পুরনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক পদমর্যাদার কেউ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান না। ওখানকার শিক্ষক হিসেবে প্রভাষক নিয়োগ হন, তাদের অধ্যাপক পদে যেতে লাগবে আরও ১৫ বছর। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। সেই বাস্তবতাটা আমাদের মেনে নিতে হবে।’

কেন মেনে নিতে হবে, কেনই বা এ দশা হতে দিলেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী- অতি বিনয়ের সঙ্গেও এ প্রশ্ন করতে চাই না। বলা চলে, সাহস পাচ্ছি না। কারণ এ প্রশ্নের তিনি যদি উত্তর দেন তা হলো হেনতেন-সাতসতেরো এতসব কথা বলবেন যা আর এক মহাকাব্যের মতো হয়ে যেতে পারে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না। শুধু তাই নয়, তিনি আমাকে আবার প্রধানমন্ত্রীকে হেয়প্রতিপন্নকারী হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস পেতে পারেন। যেমন তিনি পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সমালোচকদের করার প্রয়াস পেয়েছেন।

সাধারণভাবেই বোধগম্য হওয়ার কথা, দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে সব কিছুতেই দ্রুত পরিবর্তন আসছে। বর্তমান দুনিয়ায় শুঁটকির ঘ্রাণ অথবা সোঁদা মাটির গন্ধে আপ্লুত হওয়ার সুযোগ কম। সনাতনী চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন চিন্তা করতে হবে। যেতে হবে মডিউলার এডুকেশনে, ব্যান্ডেড লার্নিং চালু করা প্রয়োজন। অনেক বেশি শর্ট কোর্স, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স চালু করা দরকার। গবেষণা ও উদ্ভাবনকে ইনকিউবিশন ও কমার্শিয়ালাইজেশনে নিয়ে যেতে হবে। বাণিজ্যিকীকরণ পর্যন্ত যদি না যাওয়া যায়, তা যদি নতুন মান অর্জনের ক্ষেত্রে শিল্পকে সহায়তা না করে তাহলে সেই গবেষণায় লাভ কী? এদিকে গবেষণার নামে প্রায় ক্ষেত্রেই কী চলে সে বিষয় কিন্তু হতাশার বিভিন্ন খবর প্রায়ই প্রকাশিত হয়। এদিকে এমন সব গবেষণা হয় যার কোনো উপযোগ নেই। সায়েন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ এক সময় উন্নত মানের মোমবাতি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলা আবিষ্কার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। অনেকেই মনে করেন উচ্চশিক্ষায় যে গবেষণা হচ্ছে তাও অনেকটা এ ধারায় চলছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, একটি ডিগ্রি লাভ করা। যা পদোন্নতি কাজে লাগে। আর কোনো কাজে লাগুক অথবা না লাগুক তা নিয়ে কারওরই যেন মাথাব্যথা নেই।

বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য কেবল একটি ডিগ্রি প্রাপ্তির বাসনায় ঘুরপাক খাওয়ার সময় কিন্তু অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এ বাস্তবতা অনুধাবন করা হচ্ছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না। সব মিলিয়ে দগদগে ঘায়ের মতো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুরবস্থা দিন দিন প্রকট হচ্ছে! আর বিষয়টি রয়ে যাচ্ছে বাতনে। কিন্তু এ কি ঘটনাচক্র না কোনো বৈদেশিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন- তাও ভাবনার বিষয়। বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, কোনো জাতিকে অনুগত ও পঙ্গু করে দিতে হলে যা করা প্রয়োজন তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া। বলাই তো হয়, শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদন্ড। জাতি হিসেবে আমাদের মেরুদন্ডের অবস্থা কী- তা কি ভাবনার সময় হয়নি? মনে রাখা প্রয়োজন ব্রিটিশ রাজের আমলে বাস্তবতা উপেক্ষা করে শিক্ষাকেন্দ্রিক এ উপমাহাদেশের মুসলমানদের যে অবস্থা হয়েছিল তা এককথায় ভয়াবহ। যার রেস কিন্তু এখনো চলছে।  এখন কি আমরা বিশ্ব বাস্তবতা থেকে দূরে থাকব?  মূল সমস্যা থেকে উত্তরণের চেষ্টা না করে নানান বিষয় শিক্ষার মধ্যে অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে। এ ধারায় সম্প্রতি অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরে ১২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘টোটাল ফিটনেস প্রোগ্রাম (TFP)’ বাস্তবায়নের তান্ডব। অনেকেই মনে করেন, এটি কেবল শিক্ষায় নয়, জাতীয় পর্যায়েও অঘটন ঘটাতে পারে।

                লেখক :  জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর