শিরোনাম
রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকামুখী জনস্রোত

নিতে হবে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা

রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। বাড়তি জনসংখ্যার চাপে নুয়ে পড়ছে এ মহানগরী। ঢাকামুখী জনস্রোতের চাপ কমাতে প্রায়ই বিকেন্দ্রীকরণের তত্ত্ব আওড়ান সুধীজনেরা। কিন্তু তা যেন সোনার পাথরবাটি। কল্পনা করা গেলেও বাস্তবে যার কোনো অস্তিত্বই নেই। উচ্চ আদালতে সারা দেশের মামলার জন্য প্রতিদিনই রাজধানীতে আসে বিপুলসংখ্যক মানুষ। সরকারি-বেসরকারি সব ভালো হাসপাতাল ঢাকায় থাকায় মানুষ ঢাকামুখী হতে বাধ্য হয়। প্রথম সারির ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যম স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও ঢাকাকেন্দ্রিক। সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস, সব নিয়োগ-বদলি ঢাকাভিত্তিক। ফলে চাকরিপ্রত্যাশীর ভিড় থাকে রাজধানীর দিকে। নিয়োগ পরীক্ষা, ভর্তি ও চাকরির কোচিং- সবই ঢাকাকেন্দ্রিক। ফলে থামছেই না ঢাকামুখী জনস্রোত। প্রতিদিনই বাড়ছে শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, যানজটসহ নানান সমস্যা। ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারিতে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৬ লাখের মতো। ২০২২ সালের সর্বশেষ আদমশুমারিতে সেই জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮২-তে। ৪৮ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে সাড়ে ছয় গুণ। এ সময় দেশের সামগ্রিক জনসংখ্যা বেড়েছে দি¦গুণের কিছু বেশি। ৩০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ মহানগরীতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে গায়ে গা লাগিয়ে বসবাস করছে প্রায় ৩৩ হাজার ৭০১ জন, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে বস্তিতেই বাস করছে ৮ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ। ভাসমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। ঢাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে লাখ লাখ মানুষের আগমন ঘটে। রাজধানীর বাইরে এসব কাজ সম্পন্ন করার সুবিধা থাকলে সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি যেমন এড়ানো যেত, তেমন বিপুলসংখ্যক মানুষের বোঝা থেকে মুক্তি পেত ঢাকা। কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণের তত্ত্ব জাহিরের ঢাকঢোল যারা পেটান, তারাও ঢাকা ছাড়তে রাজি নন। এ মহানগরীকে বাসযোগ্য করে তুলতে হলে জনসংখ্যার চাপ কমাতে হবে। ঢাকামুখী জনস্রোত বন্ধে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। বাস্তবতা সামনে রেখে নিতে হবে এ-সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর