বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাদক আগ্রাসন

মূলহোতাদের ওপর আঘাত হানতে হবে

মাদক আগ্রাসনের অপ্রতিরোধ্য গতি কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না, যা নিঃসন্দেহে একটি দুঃসংবাদ। অবৈধ অস্ত্র, অর্থ আর রাজনৈতিক প্রভাবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে মাদক মাফিয়ারা। সবচেয়ে বিপজ্জনক খবর হলো- দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা কার্যত শাসন করছে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্রের সদস্যরা। তাদের সহায়তায় সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পাচার হয়ে আসছে হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য। মাদক সিন্ডিকেটের জালের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।

কয়েক বছর আগেও কক্সবাজারে ‘নুন আনতে পানতা ফুরাত’, এখন তার ব্যাংক হিসাবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। বাস করেন বিলাসবহুল ভবনে। চলেন দামি গাড়িতে। হয়েছে একরের পর একর ভূমি, মার্কেট।

কক্সবাজারে ইয়াবা ব্যবসার কল্যাণে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া ব্যক্তিদের সম্পদ অনুসন্ধান এরই মধ্যে শেষ করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক ইউনিট। কক্সবাজারের মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণকারী অনেকেরই বিরুদ্ধে মাদকের কোনো মামলা নেই! কারণ তারা সরাসরি মাদক বহনের কাজ করেন না। মাদক আইন অনুযায়ী ক্যারিয়ারের বাইরে কাউকে মামলার সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। তাই মাদক মাফিয়াদের সিংহ ভাগের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা মাদক মাফিয়াদের কবজায় আনতেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইয়াবার ব্যবসা করে টাকার কুমির হওয়া দেড় শতাধিক ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। বিজিবি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযান প্রায়ই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মাঠপর্যায়ের লোকজন ধরা পড়লেও মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। যারা ধরা পড়ছে, তারাও আবার আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে দ্রুত বেরিয়ে আসে। মাদক আগ্রাসনের টুঁটি চেপে ধরতে হলে এর রাজনৈতিক কানেকশনের অবসান ঘটাতে হবে। প্রশাসনের সঙ্গে মাদক চক্রের সম্পর্কে বাদ সাধতে হবে। মাদক পাচারের মামলায় কেউ গ্রেফতার হলে  আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে যাতে বেরিয়ে আসতে না পারে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর