শিরোনাম
রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্যুতের সিস্টেম লস

চুরি বন্ধের উদ্যোগ নিন

দেশের বিদ্যুৎ খাত সরকারের জন্য শাঁখের করাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের লোকসান মেটাতে প্রতি বছর ব্যয় করতে হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এ লোকসানের প্রধান কারণ সিস্টেম লস। দুনিয়ার সব দেশে বিদ্যুতের সিস্টেম লস থাকলেও বাংলাদেশে তা মাত্রাতিরিক্ত। আর এর পেছনে দায়ী বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ও আমদানি হয়েছে ৮৫ হাজার ৬০৭ মিলিয়ন ইউনিট। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯১২ মিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎই গচ্চা সিস্টেম লসের খাতায়। চুরির মাধ্যমে বিদ্যুৎ আত্মসাৎ করে তা সিস্টেম লস হিসেবে দেখানো হচ্ছে। গ্রাহকের কাছে প্রতি ইউনিট বিক্রয়ের গড় মূল্য ৭ টাকা ৬২ পয়সা ধরে অপচয় হওয়া বিদ্যুতের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৬ হাজার ৭৯০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন সিস্টেম লসের নামে নষ্ট হয় ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ। এর সঙ্গে বেসরকারি অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে দেওয়া বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং চার্জ ও অন্যান্য ভর্তুকি যোগ করলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণ। দিন শেষে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ক্ষতি চাপছে গ্রাহকের ঘাড়ে। অথচ শুধু চুরি ঠেকাতে পারলেই বছরে অন্তত ২ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব হতো। এদিকে গত ১ মার্চ পর্যন্ত দুই মাসে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে তিনবার। ১৪ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৩ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুৎ খাতের কথিত লোকসান পোষাতে দাম বৃদ্ধির এ জ্বালাতন আগামীতে আরও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ আইএমএফের কাছ থেকে সরকার যে ঋণ নিয়েছে সেখানে বিদ্যুতের লোকসান কমানোর বিষয়টি পূর্বশর্ত হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে এবং এ যুক্তিতে মূল্য বৃদ্ধি মেনে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কর্তৃপক্ষীয় অব্যবস্থাপনায় বিদ্যুৎ চুরি হবে আর তার দায় গ্রাহকের ওপর চাপানো কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করব বিদ্যুৎ খাতের চুরি ও অপচয় বন্ধে সরকার কঠোর হবে। এটি তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর