শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

যথেচ্ছতার ইতি ঘটুক

ভবন নির্মাণ ও ব্যবহারে সতর্কতা কাম্য

এক উদ্দেশ্যে ভবন বানিয়ে অন্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করায় বারবার ঘটছে বিপর্যয়। আবাসনের জন্য বানানো অসংখ্য ভবন রাসায়নিক পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পুরান ঢাকায়। ফলে এগুলো একেকটি ভয়াবহ বোমায় রূপান্তরিত হচ্ছে। সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের দুটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ কী তা সঠিক তদন্তে জানা যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা গ্যাস জমে সম্ভবত এমন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের মতে, একে তো আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিক ভবনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, পাশাপাশি সেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বসাতে ঘরগুলো নি-িদ্র করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পয়ঃনিষ্কাশনের যে স্টোরেজ বা সেপটিক ট্যাংক সেগুলোতে রাখা হচ্ছে না ব্যান পাইপ। ফলে রান্নাঘর, সেপটিক ট্যাংকসহ বিভিন্ন জায়গায় বিপজ্জনকভাবে গ্যাস জমে একেকটি বোমা চেম্বারে পরিণত হচ্ছে। আর তা সায়েন্স ল্যাব কিংবা সিদ্দিকবাজারের মতো ভয়াবহ  বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আমাদের দেশে ভবন নির্মাণের জন্য যথোপযুক্ত আইন থাকলেও তা প্রায়শই মানা হয় না। খরচ কমাতে অনেকে যেনতেনভাবে ভবন নির্মাণ করে নিজেদের ভবিষ্যৎই বিপন্ন করেন। রান্নাঘরে ভেন্টিলেটরে জায়গা না থাকায় গ্যাস জমে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। ভবন নির্মাণে বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেকে প্রকৌশলী বা পেশাজীবীদের সহায়তা নেওয়াকে অপ্রয়োজনীয় খরচ বলে মনে করেন। ফলে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ভবন তৈরিতে নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। ভবন তৈরিতে যেনতেনভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক কাজ। নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করায় আগুন লাগছে অনেক ভবনে। রাজধানীতে তিন দিনে দুটি প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা প্রমাণ করেছে কান্ড জ্ঞানহীনতার খেসারত কীভাবে দিতে হচ্ছে নিরপরাধ সব মানুষকে। জীবনের অপচয় বন্ধ করতে ভবন নির্মাণে যাতে প্রকৌশলগত সব দিকনির্দেশনা পূরণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থের লোভে আবাসিক ভবনকে রাসায়নিক গুদাম বানানো যাবে না। এ বিষয়ে নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সতর্কতাও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর