বাংলাদেশে বিনিয়োগের খরা চলছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার এই দুঃসময়ে প্রতিবেশী দেশগুলো বিদেশি বিনিয়োগ টানতে পারলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। যে কোনো দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ। এ জন্য বিদেশি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশীয় বিনিয়োগের হালচাল পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশে দেশীয় বিনিয়োগের খরা থাকায় তার প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগেও। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। একই সঙ্গে এ সংকটকে সুযোগের আদলে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যবসা বিনিয়োগ চাঙা করছে পৃথিবীর অনেক দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতিও সংকটকাল অতিক্রম করছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। যার প্রথম কিস্তি ইতোমধ্যে ছাড়ও করেছে সংস্থাটি। কিস্তি ছাড়ের পর দেশের অর্থনীতি ও এই ঋণ প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএমএফ। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির কয়েকটি ঝুঁকি ও সমস্যার কথা উঠে এসেছে। তাতে বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান বাধাও চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বলা হয় বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে তার মধ্যে তিনটি হলো- উচ্চ শুল্ক-অশুল্ক বাধা, অবকাঠামোসহ উপযুক্ত পরিবেশ না থাকা ও আস্থার সংকট। ফলে অভ্যন্তরীণ কৃষি উৎপাদন বাড়লেও শিল্প উৎপাদনের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ গড়ে তুলতে গত এক দশকে অবকাঠামো খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও এখনো উপযুক্ত অবকাঠামো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আইএমএফ শাসন ব্যবস্থার উন্নতি এবং দুর্নীতি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে। সরকারি সেবা খাতগুলোর উন্নয়ন, পরিসেবাগুলোর ডিজিটালাইজেশন ও বিরোধীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপরও তারা জোর দিয়েছে। যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক। আমাদের বিশ্বাস বিনিয়োগ খরা নিরসনে সরকার অচিরেই সক্রিয় হবে। কারও পরামর্শ নয় নিজেদের স্বার্থেই।