দেশের মানুষের আমিষ চাহিদা মেটাতে পোলট্রি খাতের অবদান তুলনাহীন। তবে রোজার মাসকে সামনে রেখে পোলট্রি খামারের মালিকদের মুনাফাখোরী মনোভাব ভোক্তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এ নাজুক অবস্থায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সভাপতির কণ্ঠেও উচ্চারিত হয়েছে ক্ষোভের কথা। তিনি বলেছেন, এমন মূল্যবৃদ্ধি চলতে থাকলে সরকারকে বিদেশ থেকে গরু ও মুরগির মাংস আমদানির কথা বলতে হবে। মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির দাবি, এ খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো গত ৫২ দিনে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের ভাষ্য, দেশে প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ৩ হাজার ৫০০ টন। এর মধ্যে প্রান্তিক খামারিদের ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ এখন কেজিপ্রতি ১৬০-১৬৫ টাকা। আর করপোরেট প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় ১৩০-১৪০ টাকা। তবে পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকা পর্যন্ত এসব মুরগি বিক্রি হয়েছে। তাতে কেজিপ্রতি অন্তত ৬০ টাকা বেশি মুনাফা করেছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন অতিরিক্ত মুনাফা করছে ১২ কোটি টাকা। প্রান্তিক খামারিদের অভিযোগ, এভাবে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৫২ দিনে মুরগি বিক্রি করে করপোরেট কোম্পানিগুলো লাভ করেছে ৬২৪ কোটি টাকা। আর এক দিনের মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে তাদের ৩১২ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির পেছনে প্রান্তিক খামারিদের দায় আছে কি না সে বিষয়ে তারা কোনো কথা বলেননি। তবে এটি মহা সত্যি যে ব্রয়লার মুরগির দাম সীমা ছাড়িয়ে এখন প্রতি কেজি ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের আমিষ চাহিদা পূরণে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে। বিদেশ থেকে গরু ও মুরগি আমদানি বন্ধের ফলে মূল্যবৃদ্ধি জুলুমের শিকার হচ্ছে ভোক্তারা। রোজার মাসে মুনাফার লকলকে জিহ্বা সংবরণে সরকার সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।