বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতের প্রবাদপুরুষ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিদায়ী অভিবাদন

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চলে গেছেন না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১টায় ধানমন্ডিতে নিজের প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের স্বাস্থ্য খাতের এই প্রবাদ পুরুষ। মুক্তিযুদ্ধের এই মহান বীরের জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে। তবে তিনি বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন বকশীবাজার স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা মেডিকেলে। ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলাতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে জেনারেল ও ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএসের প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ঠিক সে মুহূর্তে দেশমাতৃকার ডাকে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। এফআরসিএসের চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই চলে আসেন দেশের মুক্তাঞ্চলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণহত্যার প্রতিবাদে লন্ডনের হাইড পার্কে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ছিঁড়ে যারা নিজেদের রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত করেন সেই অসীম সাহসীদের মধ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন অন্যতম। পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য তিনি মুক্তাঞ্চলে গড়ে তোলেন মুক্তিযুদ্ধের ফিল্ড হাসপাতাল। স্বাধীনতার পর এ হাসপাতালটি চালু করেন কুমিল্লায় বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামে। পরে সেটি সাভারে স্থানান্তর করা হয়। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়নে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পর এ ওষুধ নীতিকে সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে ভাবা হয়। ওষুধ নীতির কারণেই বাংলাদেশ আজ অন্যতম ওষুধ রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে অল্প খরচে চিকিৎসা দেওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি। স্বাধীনতা পদক, ম্যাগসাইসাই পদকসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজনরা শোকবাণী দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিদায়ী অভিবাদন।

সর্বশেষ খবর