বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটের আগুনের পেছনে নাশকতার কালো হাত জড়িত কি না তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে বিভিন্ন মহলে। ৪ এপ্রিল পুড়ে ছাই হয়েছে দেশের বৃহত্তম পাইকারি ও খুচরা বস্ত্র বিপণি কেন্দ্র বঙ্গবাজার। তার রেশ না কাটতেই নিউ সুপার মার্কেটের আগুন জনমনে সংশয় আর আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ৪ থেকে ১৫ এপ্রিল মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে সংঘটিত দুটি অগ্নিকান্ডের মধ্যে কি কোনো যোগসূত্র আছে? বঙ্গবাজারের ১২ দিন পর পুড়েছে রাজধানীর সব শ্রেণির মানুষের কেনাকাটার অন্যতম আস্থার ঠিকানা নিউ সুপার মার্কেট। বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আর নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লেগেছে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে। কাকডাকা ভোরে অনেকটা একই সময়ে দুটি প্রলয়ঙ্করী অগ্নিকান্ড ভাবিয়ে তুলছে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কেও। ঈদের আগে বেচাকেনার জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি ছিল ব্যবসায়ীদের। সবকিছু ভন্ডুল করে দিয়েছে আগুন। অগ্নিনির্বাপণ বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ফাইলবন্দিই থেকে যায় বছরের পর বছর। কমিটির সুপারিশগুলোও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আলোর মুখ দেখে না। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া এবং সুপারিশমালা বাস্তবায়িত না হওয়ায় নাশকতাকারীরাও উৎসাহিত হয়। আমাদের দেশে নাশকতা নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পর শুরু হয়েছিল নাশকতার বহু ঘটনা। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সে সময়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান মাধ্যম পাটের একের পর এক গুদাম। ২০১৪ সালে সরকার পতনের লক্ষ্যে শুরু হয় আগুনসন্ত্রাস। আগুন নিয়ে খেলা কখনো এর কুশীলবদের জন্য কল্যাণকর হয়নি। লঙ্কার আগুনে মুখ পুড়ে গিয়েছিল এর হোতা হনুমানের। আমাদের দেশেও যারা আগুন নিয়ে খেলা করেছে তাদের পরিণাম সবার জানা। বঙ্গবাজার এবং নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকান্ডের পেছনে নাশকতা থাকলে তার হোতাদের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।