তীব্র দাবদাহ জনস্বাস্থ্যের জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঠফাটা রোদে মানুষের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। দাবদাহে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সব বয়সের বিপুলসংখ্যক মানুষ। জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, চর্মরোগ, চিকেন পক্সসহ নানা রোগে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন সেবন ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, গরম এ বছর মাত্রা ছাড়াচ্ছে। খুব ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, বাইরে দীর্ঘ সময় কাজ করেন এমন ব্যক্তি, মানসিক রোগী এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত মানুষ বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। পরিবেশের তাপমাত্রা বেশি বাড়লে শরীরে পানিশূন্যতা, হিট ক্রাম্প, অবসাদ, হিটস্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। গরমে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর লবণ ও পানি হারায় আমাদের দেহ। এই পানির ঘাটতি পূরণ না করলে পানিশূন্যতা হতে পারে। এ রকম পরিস্থিতিতে বারবার পানি পান করতে হবে। এ সময় শসা, লেবুপানি, ডাব ইত্যাদি ফল বেশি বেশি খাওয়া উচিত। সাধারণত এই মৌসুমে চিকেন পক্স রোগের বিস্তার হয়। এই ছোঁয়াচে রোগ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, তবে সতর্ক থাকতে হবে। চলতি বছর গ্রীষ্মের শুরুতেই তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে চলেছে। ২০১৪ সালের পর গত শনিবার ছিল সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন। ৯ বছর আগে ২৪ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শনিবার চুয়াডাঙ্গায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৬৫ সালের পর এত তাপমাত্রায় কখনো আক্রান্ত হয়নি ঢাকা। আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় শীতকালের মতো ঠোঁট হাত-পা ফাটতে শুরু করেছে অনেকের। ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ দাবদাহ জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি ফসলহানির আশঙ্কা তৈরি করছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে অতিরিক্ত তাপে। আবহাওয়াবিদদের মতে, ৪/৫ দিন পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে চলতে থাকবে দাবদাহের মসিবত।