বন্ধু দেশ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে বুধবার দুই দেশের মধ্যে আটটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঢাকা-টোকিও সম্পর্ক যে ইতোমধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছেছে তা কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্পোন্নয়ন, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্কসংক্রান্ত বিষয়, মেধাসম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা বিষয়ে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের চুক্তিতে আরও স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, বাংলাদেশ-জাপান বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’ থেকে সফলভাবে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী কিশিদা এবং শেখ হাসিনা সম্পর্কের আদ্যোপান্ত আলোচনা করেছেন। উভয় পক্ষ বাংলাদেশ-জাপান বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ব্যাপক অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছানোর বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠককালে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বহুমুখী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাপান। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখারও দেওয়া হয়েছে আশ্বাস। চুক্তি স্বাক্ষর করে যৌথ বিবৃতি প্রদানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাপান বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। যে কয়েকটি দেশ ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দিয়েছিল জাপান তাদের মধ্যে একটি। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর জাপান যখন চরম কোণঠাসা অবস্থায় তখন একজন বাঙালি বিচারপতির রায় জাপান সম্রাটকে যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে রেহায় দেয়। যা জাপানিদের মধ্যে বাঙালিদের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে। যে কারণে জাপান ওয়াশিংটনের ভ্রুকুটি অগ্রাহ্য করেই ১৯৭২ সালের শুরুতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরকালে যমুনার ওপর সেতু নির্মাণে অর্থায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়। বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের বন্ধুত্ব ইতোমধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়েছে। যা আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।