শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

কৃষিজমি অকৃষি খাতে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

শাইখ সিরাজ

কৃষিজমি অকৃষি খাতে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

আমাদের দেশে প্রকৃত কৃষকদের কোনো নেতা নেই। নেই কৃষকদের কথা বলার কোনো প্ল্যাটফরম। আজ থেকে বছর আঠারো-উনিশ আগের কথা। আমি লক্ষ্য করলাম জাতীয় বাজেট ঘোষণার আগে সরকার বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে বাজেট নির্ধারণ করে। কিন্তু কৃষি ও কৃষকদের কথা সেখানে তেমন একটা প্রতিফলিত হয় না। যেখানে আমাদের অর্থনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কৃষি, সেখানে কৃষক থেকে যাচ্ছে মূল কেন্দ্র থেকে দূরে। খুব মনে পড়ে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জের চরে মাঝবয়সী এক কৃষককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘ভাই, প্রতি বছর সরকার দেশের জন্য একটা বাজেট পেশ করে, কোনো দিন দেখেছেন, শুনেছেন, জানেন কিছু এ বিষয়ে? কৃষক উত্তর দিয়েছিল- ‘এইতান আমরা ফাইছিও না, খাইছিও না।’ এ কৃষক মনে করেছিল সরকার কোনো রিলিফের মাল বরাদ্দ দিয়েছিল, সেটা তার ভাগ্যে পড়েনি। কুড়িগ্রামে গ্রামের এক চায়ের স্টলে বসা জনাপাঁচেক কৃষক আড্ডায় মশগুল; সেখানে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘আচ্ছা, রাষ্ট্র প্রতি বছর একটা বাজেট পেশ করে, সেখানে কৃষিরও একটা অংশ থাকে, এ সম্পর্কে আপনারা জানেন কিছু?’ এক বৃদ্ধ কৃষক মাথা চুলকাতে চুলকাতে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘সরকার যে এইতা দেয়, হামাগোরে তো জিগায়ও না।’ মানিকগঞ্জে মাঠে ধানের চারা লাগানোরত এক তরুণ কৃষককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘তুমি কি জান, প্রতি বছর বাজেট হয়?’ খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিল- ‘আমি জানি না, কিন্তু আমার বাবায় আছে, হেয় জানে।’ অর্থাৎ বোঝা গেল বাংলাদেশের তিন প্রান্তের তিন বয়সের কৃষকের মধ্যে কারোরই বাজেট সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। এ চাহিদা থেকেই ২০০৬ সালে চ্যানেল আইতে হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে শুরু করি ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’। মনে পড়ে আজ থেকে ১৮ বছর আগে যখন প্রথম গ্রামের কোনো উন্মুক্ত মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েক হাজার কৃষকের সামনে শুরু করি প্রাক-বাজেট আলোচনা ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’, সেখানে হাজার তিনেক কৃষকের সামনে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলাম- আপনারা কেউ একজন বলবেন, বাজেট সম্পর্কে আপনাদের কোনো ধারণা আছে কি না? এমন একজন কৃষকও পাইনি যে হাত তুলেছিল উত্তরটি দেওয়ার জন্য। সে সময়টাতে গ্রামের সাধারণ এ কৃষকরা ফ্লাডলাইটের আলোতে মাইক্রোফোনের সামনে বসে থাকা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং স্থানীয় জনপ্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সাহস সঞ্চয় করে ওঠেনি। সেটিই ছিল আমার এ অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য, যেখানে একজন প্রান্তিক কৃষক আগামীতে গলা ছেড়ে কথা বলে নিজের অধিকার, পাওয়া-না পাওয়া আর বঞ্চনার বিষয়গুলো সবার সামনে তুলে ধরবে। এটিই হবে গণমাধ্যমের মূল কাজ। সেই থেকে যাত্রা শুরু।

২০০৬ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত মোট ৭০টি স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট। কমপক্ষে সাড়ে ৪ লাখ কৃষক উপস্থিত থেকে তুলে ধরেছেন দেশের সব কৃষিজীবী জনগোষ্ঠীর প্রাণের কথা। আর এসব উন্মুক্ত প্রাক-বাজেট সমাবেশে উপস্থিত থেকেছেন সরকারের মন্ত্রিপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যবৃন্দ। সেই সঙ্গে আমরা পেয়েছি অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, নীতি বিশ্লেষক, উন্নয়ন পরিকল্পনাবিদ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসন, কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সরকারযন্ত্র ও সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবগর্কে। কৃষকের দাবি প্রস্তাব ও সুপারিশ এ পর্যন্ত সতেরবার জমা দেওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। এ সময়ের মধ্যেই কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট কার্যক্রমের মাধ্যমে উঠে আসা সুপারিশগুলোর বেশ কয়েকটি মূল্যায়িত হয়েছে, বাকিগুলো গেছে ধারণার মধ্যে।

আমি চেয়েছি রাষ্ট্রীয় নীতি, পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক বিবরণীতে কৃষকের বাস্তবসম্মত চিন্তা, সুপারিশ, বঞ্চনা ইত্যাদি উঠে আসুক। আর এ প্রত্যাশায় দিনের পর দিন এ কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে দেশের কৃতী অর্থনীতিবিদদের। একই সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়া হয় জাতীয় বাজেটের আগে সরকারের কাছে কৃষকদের মাঠপর্যায়ের এ কণ্ঠস্বর লিখিত সুপারিশ ও প্রস্তাবনা আকারে সরকারের কাছে পেশ করার। ২০০৬ সাল থেকে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রীর মাধ্যমে ওই সুপারিশমালা তুলে ধরা হচ্ছে সরকারের কাছে।

ুএরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও ২০২২-২৩ অর্থবছরকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে প্রাক-বাজেট আলোচনা ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’। এবারের প্রথম আয়োজনটি ছিল সিরাজগঞ্জ জেলার চরমালশাপাড়া এলাকার ৩ নম্বর চায়না বাঁধের ওপরে। উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩ হাজার কৃষক। যথারীতি উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় সরকারের কর্তাব্যক্তিগণ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সে সময় অসুস্থতার কারণে তিনি থাকতে পারেননি। যমুনা নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জের কৃষি অনেকটা চরভিত্তিক। সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, জেলায় মোট আবাদযোগ্য জমি প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৪০ হেক্টর চরাঞ্চলে। সময়ের প্রয়োজনে ফসল আবাদের বৈচিত্র্য ও নিবিড়তা বাড়িয়েছেন সিরাজগঞ্জের কৃষকরা। ফল-ফসল উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে এ এলাকার চরের কৃষকদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

যাই হোক, অনুষ্ঠানের রেওয়াজ অনুযায়ী প্রথমেই বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বয়স্ক একজন কৃষক। যিনি ওই এলাকার কৃষির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত এবং সে এলাকার কৃষকদের অবস্থা, সমস্যা এবং কৃষি প্রকৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখেন। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন এটি শুধুই একটি বাজেট নিয়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান নয়, এটি মাঠপর্যায়ের একটা প্রত্যক্ষ জরিপ, যেখানে কৃষকরা পক্ষে-বিপক্ষে সরাসরি মতামত দিয়ে থাকেন। 

কৃষিজমি অকৃষি খাতে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এক কৃষক বললেন, চায়না বাঁধের উত্তরে যে ফসলি জমি দেখছেন, এমন ফসলি ছিল বাঁধের দক্ষিণেও। কিন্তু দক্ষিণে হাজার হাজার বিঘা জমি এখন বালি ফেলে কৃষির অনুপযোগী করে ফেলা হয়েছে। এখানে আমাদের বাপ-দাদারা ফসল ফলিয়েছে। আমরা নিজেরা ফসল ফলিয়েছি। পাঁচ বছর ধরে বালি ফেলে এ জমি দখল করে রেখেছে। আমাগর জমি অধিগ্রহণ করে টাকাও দেয় না, জমিতে চাষও করতে দেয় না। বহু নেতার কাছে গেছি, কেউ এর সমাধানও দেয় না। উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে জানান অপর এক কৃষক। তিনি বলেন, সরকার কৃষি ও কৃষকের কথা ভেবে অনেক কিছুই করছে। কিন্তু কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষক আরও ঘুরে দাঁড়াতে পারত। তবে নিজেদের গাফিলতির কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই একই রকম ফসল উৎপাদন করি। কেউ লাউ চাষে সফল হলে তার দেখাদেখি সবাই লাউ চাষ শুরু করি। এতে বাজারে মূল্য থাকে না। সরকার যদি ফসল উৎপাদনের জন্য এলাকাভিত্তিক একটা চার্ট করে দিত তবে উপকার হতো। আমরা সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফসল উৎপাদন করতে পারতাম।

উপস্থিত প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষকের অভিযোগ ছিল- সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাচ্ছেন না। দোকানে টাঙানো মূল্য এক কিন্তু সারের কৃত্রিম সংকটের কথা তুলে ডিলাররা বেশি দামে কৃষককে সার কিনতে বাধ্য করছেন। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কৃষকরা এ ব্যাপারে তার কাছে অভিযোগ জানাননি। কেউ যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানান তবে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি সার বিতরণের ব্যাপারে তিনি মনিটরিং বাড়ানোর আশ্বাস দেন। এক কৃষানি বলেন, ‘সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হইছি। কিন্তু কোনো সাহায্য পাই নাই।’ অধিকাংশ কৃষকের অভিযোগ ছিল এলাকার প্রভাবশালীরা খাল ও হালট ভরাট করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করার কারণে জমিতে জমা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সুযোগ না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যেন এ বিষয়টিতে জরুরি পদক্ষেপ নেয় এমন দাবি ছিল তাদের।

উপস্থিত ৩ হাজার কৃষকের শতকরা ৯০ ভাগ প্রস্তাব করছেন আগামী বাজেটগুলোতে নদী ভাঙন রোধ, নদী ও খাল খনন এবং জলাবদ্ধতা দূর করা- এগুলোই প্রধান প্রধান ইস্যু হয়ে সরকারের সামনে আসবে। বিএডিসির বারিক পাইপ সেচ প্রকল্পের সুফলে আনন্দিত এক কৃষক জানালেন, পুরো বাংলাদেশে এমন সেচ সুবিধার আওতায় আনা গেলে ফলে-ফসলে ভরে উঠবে সারা দেশ।

প্রশ্ন ছিল কৃষিঋণ নিয়ে। জানতে চেয়েছিলাম, ‘আপনারা ঋণ কোথা থেকে নেন? সরকারের ব্যাংক নাকি এনজিও থেকে?’ উপস্থিত প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষক জানালেন- তারা এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। কারণ এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া সহজ। ব্যাংকে ঋণের জন্য বেশি ঘুরতে হয়। কৃষকদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা কৃষি শ্রমিকের অভাব। এক কৃষক বললেন, ‘জামাই আদর দিয়াও কৃষিকাজের জন্য লোক পাওয়া যায় না।’ কৃষি শ্রমিক পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দেশের সব এলাকার কৃষকদের এ সমস্যা রয়েছে। তাই কৃষিকে কৃষকের হাতে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাজেটে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিষয়টিকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এক কৃষক জানালেন, কৃষি শ্রমিকের পেছনে অধিক খরচের ফলে ধানে লাভ প্রায় থাকেই না। তার পরামর্শ ছিল সমবায় ভিত্তিতে কৃষকদের যদি সরকার হার্ভেস্টার দেয় তবে এ সংকট থেকে কোটি কোটি কৃষক বেঁচে যাবে। এ অঞ্চলের কৃষক যান্ত্রিক কৃষি বলতে বোঝে শুধু ট্রাক্টরে জমি চাষ করা আর নলকূপ দিয়ে সেচ দেওয়া। কৃষিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে এখনো তেমন সচেতন হয়ে উঠেননি এখানকার কৃষক। কৃষকের হাতের মুঠোতেই যে আছে কৃষিবিষয়ক সব প্রশ্নের উত্তর, নানান তথ্য, সে বিষয়ে কৃষক খুব একটা খোঁজখবর রাখে না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করা কৃষি অ্যাপস সম্পর্কে অধিকাংশ কৃষকই কিছু জানে না।

ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা সরিষা, সূর্যমুখীসহ তৈলবীজ উৎপাদন করছে। জরিপে দেখা যায় তৈলবীজের চাষ বেড়েছে প্রায় শতকরা ৩৫ শতাংশ। সেচের বিদ্যুৎ নিয়ে কৃষকের অভিযোগ তেমন নেই। মনে আছে ২০০৮ সালের কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেটে এক কৃষক অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘আকাশের বিজলি তা-ও চোখে দেখি, কিন্তু ঘরের বিদ্যুৎ কখন যায় আর কখন আসে চোখে দেখি না।’ সেচের বিদ্যুতে কৃষক সন্তুষ্ট। পোলট্রি খামারিদের বিস্তর অভিযোগ ছিল বাজার অব্যবস্থাপনা নিয়ে। এ ছাড়া প্রাণিসম্পদ খাতের খামারিদের একটাই দাবি- খাবারের দাম কমানোর। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দেন অনেক খামারি।

বয়স্ক এক কৃষক বললেন, সিরাজগঞ্জে ২৬ হাজার মৎস্যজীবী আছেন। আর ভিজিএফ কার্ড পেয়েছেন ৮ হাজার। সংখ্যাটা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি চলনবিল এলাকার জেলেদের ভিজিএফের আওতায় আনার পরামর্শ দেন। এতে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন দ্বিগুণ হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।

লেখক : মিডিয়া ব্যক্তিত্ব  

[email protected]

 

সর্বশেষ খবর