রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের পাল্টা প্রস্তুতিটা থাকতে হবে!

নঈম নিজাম

আওয়ামী লীগের পাল্টা প্রস্তুতিটা থাকতে হবে!

হুট করে চলে গেলেন চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাফর আহমেদ। এত দ্রুত চলে যাওয়ার কথা ছিল না। তবু গেলেন। এভাবে সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। কেউই থাকব না দুনিয়াতে। জাফর আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর সহযোদ্ধারা সামাজিক মাধ্যমে আক্ষেপ করছেন। লিখছেন বেদনার কথা। দলের খারাপ সময়ে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি ছাত্রলীগের দায়িত্বে ছিলেন। চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। শিবিরের বিরুদ্ধে কঠিন সংগ্রামে ছাত্র সংসদে জয় আনেন। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ জমানায় ছাত্রলীগের কোনো বিজয় ছিল বিশাল ঘটনা।  তখন অনেকে আওয়ামী লীগ নাম শুনলে মুখ বাঁকাতেন। ছাত্রলীগ দেখলে নিজেদের আড়াল করতেন। রাজনীতির কঠিনতম সময়ে একজন জাফর ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে। দুঃসময় কেটে গেল। হারিয়ে গেলেন একজন জাফর আহমেদও। ছাত্রলীগ ছাড়ার পর ৪০ বছর আওয়ামী লীগে কোনো পদপদবি পেলেন না। জাতীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। যোগাযোগ ছিল। দলের সব অনুষ্ঠানে যেতেন। অংশ নিতেন সামনের কাতারে। সবাই সম্মান দিতেন। কেউ বুঝতে পারত না, তিনি কোনো কিছুতে নেই। তাঁর কোনো পদবি নেই। মৃত্যুর পর সবাই বিষয়টি খেয়াল করলেন। আলোচনা করলেন নিজেদের ভিতরে-বাইরে।

না পাওয়ার একটা বেদনা ছিল এই মানুষটিরও। কাউকে কোনো কিছু বুঝতে দেননি। দুঃসময়ের কর্মীরা একটু আলাদাই হন। হাইব্রিড, নবাগত, বহিরাগতদের সঙ্গে তাদের মেলানো যাবে না। জাফর আহমেদরা রাজনীতির হিসাবনিকাশ কষেন না। নিজেদের স্বার্থ দেখেন না। না পাওয়ার বেদনায় দল ও আদর্শ ছাড়েন না। সুবিধাভোগীরা দলে আসে যায়। ২০০১ সালের পর ’৯৬ সালের সুবিধাভোগীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০০৯ সালের পরের লোকজনই এখন বেশি কথা বলছে। আর জাফর আহমেদরা আদর্শ টিকিয়ে রাখছেন। রাজনীতির চিরচেনা জগৎটা কেমন যেন বদলে গেছে। এ চিত্র শুধু আওয়ামী লীগে নয়, সব দলেই। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ক্রমান্বয়ে বদলে যাচ্ছে। সবখানে শুধুই চাওয়াপাওয়ার হিসাব। পরস্পরকে দোষারোপের অদ্ভুত রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

নুরুল হুদা নামে বিএনপির একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাঁর লেখা একটি গান- ‘আগে যদি জানতাম তবে মন ফিরে চাইতাম, এই জ্বালা আর প্রাণে সহে না।’ লাকী আখন্দের কণ্ঠে আশির দশকের আলোচিত গানটি ছিল মানুষের মুখে মুখে। নুরুল হুদা ছিলেন বিসিএস প্রশাসন ’৭৩ ব্যাচের কর্মকর্তা। ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর প্রশাসনে গেলেও মন ছিল রাজনীতিতে। তাই প্রশাসন ছাড়লেন। অংশ নিলেন ’৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করলেন। জয়ী হলেন। পরে জিয়াউর রহমানের আহ্বানে চলে গেলেন বিএনপিতে। ’৯১ সালে ভোটে জিতে প্রথমে তথ্য পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর লেখা আরও কিছু ভালো গান আছে। রাজনীতিতে একটা সময় সংস্কৃতির চর্চা ছিল। শিল্পী-সাহিত্যিকদের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সম্পর্কের গভীরতা ছিল। জেলা, উপজেলা সদরে রাজনীতিবিদরা সংস্কৃতিচর্চার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এখন সেসব নেই। এখন সবাই ধরো মারো খাও নীতিতে আছে।

দেশজুড়ে ডালপালা গজিয়েছে অপসংস্কৃতির। মফস্বল শহরগুলোয় এখন সুস্থ ধারার সংস্কৃতিচর্চা নেই। জেলা-উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমি আছে। শৈল্পিক কর্মকান্ড নেই। আগে মফস্বলে সারা রাত যাত্রা উৎসব হতো। যাত্রার সঙ্গে থাকত সার্কাস, পুতুলনাচসহ নানা আয়োজন। কোনো কিছু নেই এখন। জুয়ার অজুহাতে প্রশাসন যাত্রার অনুমতি দেয় না।

কৃষিমেলার আয়োজন হয় না। জুয়া বন্ধ করে অন্য সব আয়োজনের অনুমতি দিতে সমস্যা কোথায় জানি না। আমাদের অনেক ঐতিহ্য এখন শুধুই ইতিহাস। ডিজিটাল দুনিয়া আমাদের আবেগ কেড়েছে, সঙ্গে নিয়েছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও। আড্ডায় আলাপে এক বন্ধু বললেন, তুমি আছো শিল্প-সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য নিয়ে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে শুধু সংস্কৃতি কীভাবে টিকে থাকে? রাজনীতি এখন ধীরে ধীরে রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে চলে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী আর আমলাদের কাছে জিম্মি হচ্ছে রাজনীতি। ব্যবসায়ীরা আছেন সংসদে দাপুটে অবস্থানে। রাজনীতিবিদরাও পরিস্থিতির কাছে অসহায়। তাঁদের কেউ কেউ ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। বেলা শেষে তাঁদের কোনোটাই মেলে না। শ্যাম রাখি না কুল রাখি করতে করতে বেলা বয়ে যায়।

ব্যবসায়ী আর আমলাদের রাজনীতিতে আনেন রাজনীতিবিদরাই। খাল কেটে কুমির আনার বিষয়টি তাঁরা বোঝেন না। সামান্য স্বার্থ আর টাকার কাছে এখন বিক্রি হয় পদ। অনেক জ্যেষ্ঠ প্রবীণ নেতাকে এসব কান্ডে জড়াতে দেখলে হতাশ হই। বিস্মিত হই। আদর্শিক ধারাটা নিজেরা ধরে রাখতে না পারলে এমনই হয়। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। অনেক ত্যাগী নেতাকে এমন কান্ডে জড়াতে দেখলে হতাশা আসে। বেদনায় নীল হয় চারপাশ।

রাজনৈতিক আদর্শের প্রশ্নে আরেকটা পুরনো ঘটনা মনে পড়েছে। আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক তখন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। প্রবীণ এই আইনজীবী হঠাৎ ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম থেকে পদত্যাগের। অনেকে চমকে উঠলেন। সিরাজুল হক কলকাতার বেকার হোস্টেলে থাকতেই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে চলতেন। ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছের মানুষ ছিলেন। রাজনীতিও করতেন আওয়ামী লীগের। মুক্তিযুদ্ধে বলিষ্ঠ সংগঠকের ভূমিকা ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর এমপিদের সঙ্গে খন্দকার মোশতাকের বৈঠকে তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। মোশতাককে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সম্বোধন করতে অস্বীকৃতি জানান। চ্যালেঞ্জ করেন একজন খুনির রাষ্ট্রপতি পদ নিয়ে। এমপিদের সামনে মোশতাক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এভাবে সবাই পারে না। সিরাজুল হক পেরেছিলেন। খুনিকে তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন তার অপরাধ, জাতির পিতার সঙ্গে বেইমানি আর বিশ্বাসঘাতকতার কথা। সেই সিরাজুল হক হুট করে আওয়ামী লীগের পদ ছাড়লেন, তারপর এরশাদের আইনজীবীর দায়িত্ব নিলেন। তিন জোটের আন্দোলনে এরশাদের পতন হয়েছিল। আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা ছিল বলিষ্ঠ। এরশাদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে গিয়ে আদর্শিক অবস্থানকে বিব্রত না করে সিরাজুল হক পদত্যাগ করলেন। সৈয়দ বোরহান কবীর তখন সিরাজুল হকের বাড়িতে নিয়মিত যান। মাঝে মাঝে সঙ্গে থাকতাম আমিও। আদালতের ঘটনাবলি, মামলার গতিবিধি শুনতাম। আইনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা তিনি তুলে ধরতেন। আমাদের বোঝাতেন। দারুণ আড্ডাপ্রিয় মানুষ ছিলেন। মাঝে মাঝে এই প্রবীণ জমিয়ে গল্প করতেন। কথায় কথায় বলেছিলেন, পেশাগত কারণে টাকার প্রয়োজন আছে। অর্থের প্রয়োজনসহ নানামুখী কারণে তিনি এরশাদের মামলার আইনজীবীর দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি আঁকড়ে রাখেননি দলীয় পদ। আদালতে সিরাজুল হকের একটা উচ্চতা ছিল। সম্মান ছিল দলেও। জুনিয়র-সিনিয়র সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা ছিল। পদত্যাগ তাঁকে দিয়েছিল নতুন মর্যাদা।

অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের মতো আইনজীবী, রাজনীতিবিদ আর নেই। নীতির কাছে দায়বদ্ধতা থেকে কেউ দল ছাড়ে না। দল বের করে দিলেও কারও কিছু যায় আসে না। সবাই এখন ক্ষমতার পেছনে ছুটছে। অর্থবিত্তের কাছে বিকিয়ে দিচ্ছে নিজেদের। ভিন্নমতের মামলা পরিচালনার জন্য এ যুগে কেউ কি দায়িত্ব ছাড়বে? পদত্যাগ করবে দলীয় পদ থেকে? আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন একটি পদ। এতে ঠাঁই মেলে দলের প্রবীণ সদস্যদের। তখনকার প্রেক্ষাপটে দলকে বিতর্কিত অবস্থানে নিতে চাননি বলেই সিরাজুল হক পদত্যাগ করেছিলেন। পেশাগতভাবে অর্থ আয় ও নিজের রাজনীতিকে তিনি এক চোখে দেখেননি। অনেক বছর পর আওয়ামী লীগের আরেকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপুর আইনজীবীর দায়িত্ব নেন। এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপুর আইনজীবীর দায়িত্ব অবশ্যই নিতে পারেন কেউ। এতে কোনো সমস্যা দেখি না। সদস্যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। তিনি একই সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থাকলে ভুল বার্তা যায় কর্মীদের কাছে।

তার পরও বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে চাই রাজনীতির প্রতি। দিন শেষে একজন রাজনীতিবিদ মানুষের জন্য কাজ করেন। ২৪ ঘণ্টা দলের নেতা-কর্মীদের কমবেশি সময় দেন। সরকারি দলের ধারার সঙ্গে বিরোধী দলের হিসাব মিলবে না। গণতান্ত্রিক চর্চা, ভোটের হিসাব থাকলে রাজনীতি জমে আসনভিত্তিক। কর্মীরা চাঙা থাকেন। এখন অনেক এমপি, মন্ত্রী এলাকায় যান না। সাধারণ মানুষ দূরে থাকুক, নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরও সময় দেন না। অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন দলবাণিজ্যে।

বুঝতে হবে আসমানি ম্যাজিকে সবকিছু সব সময় এক রকম যায় না। সবাইকে কঠিন বাস্তবতায় থাকতে হবে। দল টেকাতে এলাকায় যেতে হবে। প্রস্তুতি রাখতে হবে একটা অংশগ্রহণমূলক ভালো ভোটের। রাজনীতির হিসাবনিকাশ সময়ের সঙ্গে বদল হয়। প্রতি পাঁচ বছর পর ভোটের হিসাবে পরিবর্তন আসে। আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায়। বিশ্বের কাছে এই সময়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে মর্যাদার আসন নিয়েছে। সারা দুনিয়া আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছে। এ অবস্থান ধরে রাখতে হবে। দলের ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে। দেশে দল আছে দুটি। একটি আওয়ামী লীগ। আরেকটি অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। সব সময় আওয়ামী লীগবিরোধী শিবির ভোটের প্রশ্নে এক থাকে। সেদিন একজন বললেন, আওয়ামী লীগের একটা সুবিধা আছে। সেই সুবিধা হচ্ছে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সম্পদ শেখ হাসিনা। তাঁর দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা, উন্নয়ন, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দর্শন মানুষের মাঝে আস্থা তৈরি করেছে। তাঁর সমালোচকরাও বলছেন, তিনি উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন এ দেশকে। এখন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখছে। যারা একসময় বাংলাদেশকে বলতেন তলাবিহীন ঝুড়ি, তারাও শেখ হাসিনার প্রশংসা করছেন। বলছেন, বাংলাদেশের কভিড ও যুদ্ধের অর্থনীতি সফলভাবে জয় করার কথা।

শেখ হাসিনা টানা ১৪ বছরে দেশকে নতুন একটা অবস্থানে এনেছেন। চোখধাঁধানো দৃশ্যমান উন্নয়নগুলো চোখে পড়ছে। এ দেশের মানুষ কর্ণফুলীর নিচ দিয়ে টানেলে পার হবে ভাবতেও পারেনি। চিন্তাও করেনি পদ্মার বুক চিরে ব্রিজে চড়ে যাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। কারও ভাবনায় ছিল না মেট্রোরেলে চড়বে ঢাকা শহরে। বিদেশ গিয়ে সবাই এমন সব ব্রিজ, টানেল, উড়ালসড়কের ছবি তুলতেন। সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্ময়কর মন্তব্য লিখতেন। আর এখন মুগ্ধ হয়ে কক্সবাজার রেলস্টেশন, শাহজালাল বিমানবন্দর, পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কের ছবি তোলেন। উন্নয়ন-সমৃদ্ধিতে আগামী নভেম্বরের ভিতরে আরও অনেক কিছু দেখবে এ দেশ। এখন কোনো কিছু গল্প নয়, কঠিন বাস্তবতা। মানুষ শেখ হাসিনার আমলে উন্নয়ন বাস্তবতা দেখছে। এ অবস্থান অর্বাচীন আওয়ামী লীগারের কারণে ব্যাহত হতে দেওয়া যায় না। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন, কমিটি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এলাকাবিচ্ছিন্ন, বিতর্কিত এমপিদের বাদ দিতে হবে ভোটের মনোনয়ন থেকে। অংশগ্রহণমূলক ভোটের প্রস্তুতি নিয়েই হিসাবের ছক কষতে হবে। যাঁরা শেখ হাসিনার নীতি-আদর্শের বাইরে তাঁদের কি দলে রাখা জরুরি?

ভোটের হিসাবে আওয়ামী লীগ শক্ত অবস্থানে। বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে দূরে। সরকারের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিনে গুলশানে বসবাস করছেন। হাসপাতালে চেকআপ করানো ছাড়া তিনি বাড়ির বাইরে পা রাখেন না। দেখাসাক্ষাৎও নেই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। অন্যদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে অনেক দিন। মামলায় সাজার কারণে তার দেশে ফেরার পথ রুদ্ধ। দৃশ্যমানভাবে বিএনপি চলছে এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে। দলের সিনিয়র প্রবীণ নেতারা সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করছেন। চেষ্টা করছেন টিকিয়ে রাখতে নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব। বিএনপি বলছে তারা ভোটে আসবে না।  বক্তব্য-বিবৃতি এটা হলেও বিএনপি ভিতরে ভিতরে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি আছে আন্দোলন ও ভোটের। পাল্টা প্রস্তুতিটা আওয়ামী লীগের থাকতে হবে। দলের নেতাদের মধ্যে ‘সব ঠিক আছে জাতীয়’ ভাব থাকলে চলবে না। ক্ষমতার রাজনীতিতে ভাব দেখানোর কিছু নেই। অনেক সময় পচা শামুকে পা কাটে।

                লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

সর্বশেষ খবর