দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য সাক্ষাৎ আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং নামের বেপরোয়া সন্ত্রাসীরা। এমন কোনো শহর বা গ্রাম খুঁজে পাওয়া দায় যেখানে কিশোর গ্যাং নামের শকুন প্রজাতির উৎপাত নেই। মেয়েদের বাল্যবিয়ের অন্যতম কারণ এসব বিপথগামী কিশোরের উৎপাত। চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত এসব খুদে সন্ত্রাসী। গ্রাম ও শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় সক্রিয় একাধিক কিশোর গ্যাং। এসব গ্যাংয়ের সদস্যদের থাকে নিজস্ব শনাক্তকরণ চিহ্নও। কারও গায়ে থাকে একাধিক ট্যাটু। এর সঙ্গে মিল রেখে তারা বিচিত্র স্টাইলে চুল কাটে এবং চুল রাঙায়। শুধু ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৮০টি কিশোর গ্যাং। যাতে জড়িত প্রায় সাড়ে ৩০০ কিশোর। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৬৪ জেলা, থানা, বিভাগ ও মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ থেকে ৬ হাজার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যের দাপটে অতিষ্ঠ গ্রাম, পাড়া-মহল্লা ও শহরের বাসিন্দারা। সাধারণত এসব গ্যাংয়ে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য থাকে। ঢাকার উত্তরা, তুরাগ, খিলগাঁও, দক্ষিণখান, টঙ্গী, সূত্রাপুর, ডেমরা, সবুজবাগ, খিলক্ষেত, কোতোয়ালি, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, আগারগাঁও ও হাতিরঝিলে কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এক সময় কিশোর গ্যাং কালচার রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানীতে মূলত বস্তির বখে যাওয়া কিশোরদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে কিশোর গ্যাং। এদের সঙ্গে জড়িত হয় নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা। কোথাও কোথাও মধ্যবিত্ত এমনকি উচ্চবিত্ত পরিবারের বখে যাওয়া সন্তানরাও জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ে। এদের পেছনে অসৎ রাজনীতির কুশীলবদের মদদ আছে বলে ধারণা করা হয়। নেতা নামধারী রাজনৈতিক মাস্তানরা নিজেদের অপকর্ম সংঘটনে কিশোর গ্যাংগুলোকে কাজে লাগায় এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে কিশোর গ্যাংয়ের লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নিতে হবে। ধরতে হবে তাদের পৃষ্ঠপোষকদেরও।