বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনায় পানির সংকট

কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে হবে

খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে চলছে সুপেয় পানির সংকট। কয়েক বছর ধরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খুলনার কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ থেকেও পানি উঠছে না। সংরক্ষণের অভাবে পুকুর দিঘিসহ মিঠা পানির নিরাপদ উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে। পানি বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, চিংড়ি চাষ ও কৃষিজমি-জলাভূমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠছে। খুলনার উপকূলীয় কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছায় খাবার পানি সংগ্রহ করতে পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে মাইলের পর মাইল। অপরিচ্ছন্ন ও দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে উপকূলবাসী। খুলনা মহানগরীর পানির সংকট মেটাতে আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা ওয়াসা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের স্থান বস্তি এলাকা ওয়াসার পানি সংযোগ থেকে বঞ্চিত। নিরাপদ পানির অভাবে চরম বিপাকে পড়ছেন নিম্ন মধ্যবিত্তরা। পানিবিষয়ক গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান অ্যাওসেড-এর পরিসংখ্যানে খুলনার ২২ শতাংশ, বাগেরহাটের ১৫ শতাংশ এবং সাতক্ষীরার ১৩ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে ভুগছেন। সরকারিভাবে এ তথ্য দেওয়া হলেও বাস্তবের চিত্র আরও ভয়াবহ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃহত্তর খুলনায় তিন জেলার লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। খুলনা মহানগরীর পানিতেও হানা দিয়েছে লবণাক্ততার থাবা। বাইরের কেউ খুলনায় এলে পানি পান করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় ভোগেন। খুলনার ১৫ লাখ মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২৪ কোটি লিটার। খুলনা ওয়াসা সরবরাহ করতে পারে ২১ কোটি লিটার। ফলে বস্তি এলাকাগুলোতে বছরজুড়ে পানির ভয়াবহ সংকট থাকে। গ্রীষ্মে তা অসহনীয় হয়ে ওঠে। খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুপেয় পানির সংকট মোচনে কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলা প্রত্যাশিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর