মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বেচ্ছায় রক্তদান

সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন

দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের পরিমাণ কম হওয়ায় রক্তের প্রয়োজন হয় এমন রোগীর স্বজনরা প্রায়ই বিপাকে পড়েন। বাধ্য হয়ে তারা ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ব্লাড ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে রক্ত কেনেন। ব্লাড ব্যাংকের কাছে যারা রক্ত বিক্রি করেন তার সিংহভাগই মাদকসেবী। মাদকের টাকার জন্য যে তারা রক্ত বিক্রি করেন এটি ওপেন সিক্রেট। নিরাপদ রক্তের অভাবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তরা। এ ধরনের রোগীকে প্রতি মাসেই রক্ত দিতে হয়। কিন্তু তাদের জন্য নিরাপদ রক্ত পাওয়া প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার শিকার লোকজনের প্রাণ বাঁচাতেও লাগে রক্ত। সে ক্ষেত্রেও রক্তের জন্য ছোটাছুটি করতে হয় স্বজনদের। চিকিৎসকদের মতে, দেশে ৩০-৩২ ভাগ রক্ত পাওয়া যায় স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে থেকে। এ ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রক্তের প্রয়োজন রোগীর আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে মেটানো হয়। সরকারিভাবে একটি জাতীয় কর্মসূচি বা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে শতভাগ স্বেচ্ছায় রক্তদান নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় রক্ত পাওয়া সহজ হবে। রক্তের চাহিদার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশজুড়ে অবৈধ অনেক ব্লাড ব্যাংক গজিয়ে উঠেছে। এতে নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন না হওয়ায় দুরারোগ্য রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। রক্তদান কতটা নিরাপদ এ নিয়ে কারও কারও মধ্যে সংশয় রয়েছে। দৈহিকভাবে রক্তদানে কোনো ঝুঁকি নেই। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে ওজনের ৬৫ শতাংশ রক্ত থাকে বলে ধরে নেওয়া হয়। একজন মানুষের ওজনের ১৫ শতাংশ পর্যন্ত রক্ত একবারে দান করতে পারেন। রক্ত সাধারণভাবে সংগ্রহ করা হয় ৪৫০-৫০০ মিলিলিটার। সে হিসেবে রক্ত দান করলে শরীর থেকে বড় পরিমাণ রক্ত চলে যায় না। যারা রক্ত দান করেন তারা শারীরিকভাবে সুস্থই থাকেন না, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকেও নিরাপদ থাকেন। রক্তদানে সারা দেশে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠলে নিরাপদ রক্তের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। স্বাস্থ্যঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাবেন রোগীরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর