বুধবার, ১০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীর মাঠ ও পার্ক

বাণিজ্যিকীকরণের ভুল পথ থেকে সরে আসুন

রাজধানী থেকে উধাও হয়ে গেছে বেশির ভাগ খেলার মাঠ। দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় যেসব মাঠ ও পার্ক রয়েছে সেগুলোকে বাণিজ্যের মাধ্যম বানিয়ে সাধারণ মানুষের আওতার বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে। রাজধানীর জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার বা বিনোদনের জায়গা খুবই সীমিত। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মাঠ ও পার্ক রয়েছে মাত্র ৫৩টি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের ৩১টি ও ঢাকা উত্তরের ২২টি। এর বাইরে অনেক ওয়ার্ডে নেই পার্ক ও মাঠ। জনসংখ্যা অনুযায়ী বিনোদন স্থানের সংকটের মধ্যেও সিটি করপোরেশন মাঠ ও পার্ক ইজারা দিচ্ছে, যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে নানা বাণিজ্যিক অবকাঠামো। এসব স্থাপনা নির্মাণের ফলে আরও কমছে পার্ক ও মাঠের জায়গা। জনবহুল এই নগরীর নাগরিক সুবিধাও হ্রাস পাচ্ছে। নগর বিশেষজ্ঞদের মতে, ইজারা দেওয়ার নামে পার্ক ও মাঠগুলো ক্লাব বা কোনো নিয়ন্ত্রণ গোষ্ঠীর হাতে চলে যাবে। পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্ন চলাচল আরও সীমিত হয়ে পড়বে। রাজধানীর ব্যস্ত এলাকা গুলিস্তানের একমাত্র স্বস্তির জায়গা শহীদ মতিউর পার্ক। এটি ইজারা দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ সংরক্ষিত করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পার্কটির চারদিকে দেয়াল দিয়ে ভিতরে বসানো হয়েছে বেশ কয়েকটি রাইড ও খাবারের দোকান। পার্কটিতে প্রবেশমূল্য নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। ইজারা দিয়ে টিকিট সিস্টেম করে পার্কটিতে জনসাধারণের প্রবেশ সংরক্ষিত করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। একইভাবে বাহাদুর শাহ পার্কও ইজারা দেওয়ায় পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের মুনাফাখোরী মনোভাবই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।  অভিন্ন আচরণ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও। নতুন নির্মিত ও সংস্কার করা ৫টি পার্ক ও খেলার মাঠ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের জন্য প্রস্তাবাকারে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। মানুষের নির্বিঘ্নে হাঁটাচলা এবং বিনোদনের স্বার্থে ভুল পথ থেকে দুই সিটির কর্তারা সরে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর