বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সুলতান ইলতুৎমিশ

দিল্লি সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা শামসুদ্দিন ইলতুৎমিশ তুর্কিস্তানের ইলবারি গোত্রের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১২১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ইলতুৎমিশের বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা ও সুদর্শন চেহারা তার ভাইদের মনে ঈর্ষার উদ্রেক করে এবং তারা তাকে বাল্যকালে ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করে দেয়। তবে এই দুর্ভাগ্য তার গুণাবলিকে বিনষ্ট করতে পারেনি। দিল্লির শাসনকর্তা কুতুবউদ্দিন তার নৈপুণ্যে আকৃষ্ট হয়ে তাকে উচ্চমূল্যে ক্রয় করেন। ইলতুৎমিশের পদমর্যাদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি দিল্লির সুলতান কুতুবউদ্দিনের অধীনে বদায়ুনের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তার সঙ্গে সুলতানের এক কন্যার বিবাহ দেওয়া হয়। ইলতুৎমিশ ১২১০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন।

সিংহাসনে আরোহণ করার পর ইলতুৎমিশ বহুবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন। তখন বাংলার পশ্চিম ও উত্তর অঞ্চলই শুধু মুসলিম অধিকারভুক্ত ছিল। ইলতুৎমিশের সিংহাসন লাভের আগেই আলী মর্দান খলজির নেতৃত্বে লখনৌতির মুসলিম রাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করে। আলী মর্দানের কাছ থেকে গিয়াসউদ্দিন ইওয়াজ খলজি ক্ষমতা কেড়ে নেন এবং তিনিও দিল্লির কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। অন্যত্র ব্যস্ত থাকার কারণে ইলতুৎমিশ লখনৌতির দিকে নজর দিতে পারেননি। ১২২৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে সুলতান নিজেই ইওয়াজের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন। একটি সন্ধির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটে। সন্ধির শর্তানুসারে ইওয়াজ খলজি ইলতুৎমিশের নামে খুতবা পাঠ ও মুদ্রা চালু করতে এবং যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮০ লাখ টাকা ও ৩৮টি হাতি প্রদানের অঙ্গীকার করেন। বিহারকে তখন বাংলা থেকে পৃথক করে আলাউদ্দিন জানীকে বিহারের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু সুলতান দিল্লিতে ফিরতে না ফিরতেই ইওয়াজ আবার বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি আলাউদ্দিন জানীকে বিহার থেকে বিতাড়িত করেন।  সুলতান তখন আলাউদ্দিন জানীসহ তার জ্যেষ্ঠপুত্র নাসিরউদ্দিন মাহমুদকে ইওয়াজের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। যুদ্ধে ইওয়াজ নিহত হন এবং লখনৌতি আবার দিল্লি সালতানাতের একটি প্রদেশে পরিণত হয় (১২২৭)। শাহজাদা নাসিরউদ্দিন ১২২৯ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন।      

জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর