সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তন

বিপদ মোকাবিলায় জিততে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের সমুদ্র তীরবর্তী সব দেশই কম-বেশি হুমকির সম্মুখীন। বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য বিপদ অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি। কারণ প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার বর্গমাইলের ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশে পরিণত হয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে অধিবাসীরা হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলভাগের কয়েক লাখ মানুষ ইতোমধ্যে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। অশুভ এই পরিবর্তন দেশকে কী বিপদের মুখে ফেলতে পারে সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সাগরের অংশ হবে। বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলো সমুদ্রের লোনা পানিতে নিমজ্জিত হবে। যা কৃষি ও মৎস্য চাষসহ জীবিকা নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করে ক্ষয়ক্ষতি কমানো শীর্ষক এক ছায়া সংসদে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে তা খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। ড. নিশাতের মতে, বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এরই মধ্যে ৭০ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। তবে এই অর্থ ব্যবহারে আমাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। নদীভাঙন রোধে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সেগুলো বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব দুর্ভাগ্যজনক। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ব্যবহারের পরিবর্তে কংক্রিট ও পাথর ব্যবহার করা হলে তা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবে। অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে ১০ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন যে সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলোর জন্য অস্তিত্বের সংকট তৈরি করছে এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সচেতন সন্দেহ নেই। তবে বিপদ এড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা যথাযথভাবে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জনও জরুরি। এ ক্ষেত্রে হেরে গেলে চলবে না। আমাদের জিততেই হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর