মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঋণখেলাপি

লুটেরাদের বিষয়ে কঠোর হোন

খেলাপি ঋণের অশোভন সংস্কৃতি থেকে দেশ কিছুতেই রেহাই পাচ্ছে না। দেশের অর্থনীতিকে সুশৃঙ্খল করতে আইএমএফের পরামর্শ ছিল খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার। এ পরামর্শকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করা হলেও এর যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না ঋণখেলাপিদের বেপরোয়া মনোভাবে। চলতি বছরের মার্চ শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা; যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা বেশি। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের তথ্য ছিল অনিরীক্ষিত। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন করে কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ খেলাপি করে দেয়। এতে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে হুহু করে। শুধু জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে খেলাপির পরিমাণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ৫৭ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা বা ১৯.৮৭ শতাংশ। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৬৫ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বা ৫.৯৬ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা বা ৪.৯০ শতাংশ ঋণ খেলাপি। ব্যাংকে যে অর্থ থাকে তা সাধারণ মানুষের আমানত। এ অর্থ নিয়ে ব্যাংক ব্যবসা করে। ঋণ দেয় লাভের উদ্দেশ্যে। কিন্তু ব্যাংকের দেওয়া ঋণ খেলাপি হলে অথবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণগ্রহিতা উধাও হলে তা শুধু সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নয়, জনগণের অর্থ লুটের শামিল। দেশে ঋণখেলাপির যে মচ্ছব চলছে এজন্য দায়ী ব্যাংক পরিচালক ও কর্মকর্তাদের কারসাজি। তারা জেনেশুনেই খেলাপি হয়ে যেতে পারেন এমন ব্যবসায়ী নামধারীকেও ঋণ দেন। জামানত ছাড়া কিংবা ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ঋণদান অহরহ ঘটছে। ব্যাংকের অর্থ যেহেতু দেশবাসীর সেহেতু তাদের স্বার্থে লুটপাট বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর