রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাজেট বিতর্ক

বাস্তবায়নে স্বচ্ছ হতে হবে

বাজেট নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থান সব দেশেই অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন তাদের ঘোষিত বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাবকে সব পেয়েছির বাজেট হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। আর বিরোধী দল প্রতিবারের বাজেটকে গণবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে আমজনতার বাহবা অর্জনের প্রয়াস চালিয়েছে। এবারের বাজেটও ব্যতিক্রম নয়। অর্থমন্ত্রী বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ সালের যে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন তা পর্যালোচনার আগেই আনন্দ মিছিল বের করেছে সরকারি দল। হয়েছে মিষ্টি বিতরণ। বিরোধী দল বিএনপি এটিকে ঋণ করে ঘি খাওয়ার বাজেট হিসেবে অভিহিত করেছে। এমনকি ১৪ বছরের আনুগত্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জাতীয় পার্টি বলেছে বাজেট বাস্তবসম্মত নয়। নির্বাচনের বছরে বাজেট প্রণয়নে নিজেদের স্বার্থেই সরকারকে আমজনতার কথা মনে রাখতে হয়েছে। যে কারণে বিশ্বমন্দায় আষ্টেপৃষ্ঠে নাজুক অবস্থায় বাঁধা পড়লেও প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক কল্যাণের দৃষ্টিগ্রাহ্য কর্মসূচি নিতে হয়েছে। তাতে লাভবান হবে লাখ লাখ গরিব মানুষ। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তাদের দেওয়া পুরো বাজেটই গরিবের জন্য উপহার। অকপটে স্বীকার করেছেন মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারও শঙ্কিত। ঘোষিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তারা কখনো ফেল করেননি, এবারও করবেন না। প্রস্তাবিত বাজেটের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। সিডিপির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। ওয়ান-ইলেভেনের বিতর্কিত সরকারের অর্থ-উপদেষ্টাও একই সুরে বাজেটকে বাস্তবতা বিবর্জিত বলে অভিহিত করেছেন। তবে সংসদের ভিতরের এবং বাইরের বিরোধী দল, সুশীলদের সংগঠন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ কিংবা অতি বাস্তববাদীদের কেউ ঘোষিত বাজেটের বিপরীতে বিকল্প কোনো বাজেট উপস্থাপন করতে পারেননি জনগণের সামনে। ঘোষিত বাজেটে সাধ থাকলেও অনেক কিছু অর্থমন্ত্রীর সাধ্যে কুলায়নি। সেটি মনে রেখে স্বচ্ছভাবে বাজেট বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে তা হবে জাতির জন্য এক বড় অর্জন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর