সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৃক্ষ নিধন

স্ববিরোধিতার অবসান কাম্য

দুই মাসে উন্নয়নের নামে শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটিতে। আরও কিছু গাছ রয়েছে কাটার অপেক্ষায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র যেখানে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় ২ লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়ে পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন সেখানে উন্নয়নের অজুহাতে শতাধিক গাছ কেটে ফেলা স্ববিরোধী কি না প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। স্মর্তব্য, রাজধানীর সাতমসজিদ রোডে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা না থামতেই একই বিতর্কে জড়িয়েছে উত্তর সিটি। অথচ সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম পরিবেশ রক্ষায় নিজের অবস্থান জানিয়ে বলেছিলেন, গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন নয়। ডিএনসিসি এলাকায় বিনা অনুমতিতে গাছ কাটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীর আমতলী থেকে গুলশান-১ পর্যন্ত সড়ক বিভাজনে থাকা কৃষ্ণচূড়া, বটসহ শতাধিক পুরনো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গাছ কাটায় ছায়া-সুশীতল সড়কটি এখন দিনভর তপ্ত হয়ে থাকে গনগনে সূর্যের তাপে। স্থানীয়রা বলছেন, একদিকে মেয়র গাছ লাগানোর প্রকল্প নিচ্ছেন, অন্যদিকে বড় বড় গাছ কেটে ফেলা দুর্ভাগ্যজনক। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৫ সালে ঢাকায় সবুজ ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৩৫.৭১ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০.৩১ শতাংশে। ফলে গ্রীষ্মের দাবদাহে রাজধানীর দুই সিটিতে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। মরুভূমি এলাকার মতো অসহ্য গরমে ভুগতে হচ্ছে নাগরিকদের। রাজধানী থেকে নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলা এবং জলাশয় ভরাট এ অস্বস্তিকর অবস্থার উদ্ভব ঘটিয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র সবুজ পরিবেশ সৃষ্টির যে অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। তবে এ বিষয়ে শুধু মেয়র নয়, সবাইকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। মেয়র লাখ লাখ গাছ রোপণের কথা বলবেন আর অন্যরা বৃক্ষ নিধন অভিযান চালাবেন তা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর