সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

গৌতম বুদ্ধ

গৌতম বুদ্ধ

বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে নেপালের তরাই অঞ্চলের কপিলাবস্তুর লুম্বিনী উদ্যানে শাক্য নামে এক ক্ষত্রীয় রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা শুদ্ধোধন ছিলেন কপিলাবস্তুর রাজা। তাঁর মায়ের নাম ছিল মায়াদেবী। বুদ্ধের জন্মতারিখ সম্পর্কে বিতর্ক থাকলেও অধিকাংশ ইতিহাসবিদ ৫৬৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দকে গৌতম বুদ্ধের জন্মকাল হিসেবে মেনে নিয়েছেন।

রাজকীয় বিলাস-বৈভব গৌতম বুদ্ধের মনকে মোটেই আকৃষ্ট করতে পারেনি। মানবজীবনের হতাশা, দুঃখ, জরা-ব্যাধি প্রভৃতির চিন্তা তাঁকে আকুল করে তোলে। তিনি সংসার সম্পর্কে ক্রমে উদাসীন হয়ে পড়লে পিতা শুদ্বোধন মাত্র ১৬ বছর বয়সে তাঁকে এক সুন্দরী রাজকন্যার সঙ্গে বিবাহ দেন। ক্রমে সংসার জীবনে দুঃখ, জরা-ব্যাধি এবং মৃত্যুর বিষয়গুলো গৌতম বুদ্ধকে খুব ভাবিয়ে তোলে। মানবজীবন থেকে ‘ত্রিতাপের যন্ত্রণা’ মোচনের জন্য তিনি উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। ২৯ বছর বয়সে রাহুল নামে তাঁর এক পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। গৌতম সংসারের মায়ার বন্ধন ছিন্ন করতে রাজকীয় ঐশ্বর্য, পুত্র রাহুল ও স্ত্রী যশোধরাকে ত্যাগ করে একদিন গভীর রাতে তিনি গোপনে গৃহত্যাগ করেন।

গৃহত্যাগের পর গৌতম বুদ্ধ দীর্ঘদিন কঠোর কৃচ্ছ্রসাধন ও তপস্যার পর দিব্যজ্ঞান লাভ করেন এবং ‘বুদ্ধ’ বা ‘মহাজ্ঞানী’ হয়ে ওঠেন। এ সময় থেকে তিনি ‘গৌতম বুদ্ধ’ বা ‘তথাগত’ নামে পরিচিত হন।

দিব্যজ্ঞান লাভের পর গৌতম বুদ্ধ মানবকল্যাণের কথা ভেবে তাঁর মতাদর্শ প্রচার করেন। তিনি সর্বপ্রথম সারানাথের মৃগদাবে তাঁর পাঁচজন অনুরাগীর মধ্যে তাঁর ধর্মমত প্রচার করেন এবং তাঁদের বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন। এরা হলেন- কৌন্ডিণ্য, ভদ্রিক, অশ্বজিৎ, বাষ্প এবং মহানাম। এই ধর্ম প্রচারের ঘটনা বৌদ্ধধর্মে ‘ধর্মচক্র প্রবর্তন’ নামে পরিচিত। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে তাঁর ধর্মমত প্রচার করেন। মগধের রাজা বিম্বিসার ও অজাতশত্রু, কোশল-রাজ প্রসেনজিৎ ও তাঁর স্ত্রী মল্লিকা, পন্ডিত সারিপুত্ত, ব্যবসায়ী অনাথপিন্ডক, পতিতা আম্রপালি, নাপিত উপালি প্রমুখ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর