মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুড়িল ফ্লাইওভার

ভারী যানবাহন নিষিদ্ধ হোক

কুড়িল ফ্লাইওভার চালুর এক দশক না পেরোতেই নানা ঝুঁকি ভর করেছে। ফ্লাইওভারের বিয়ারিং ও এক্সপানশন জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচলে অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি অনুভূত হচ্ছে। গাড়ির চাকার ঘষায় এক স্থানের পিচ অন্যদিকে সরে এবড়োখেবড়ো হয়ে উঠছে চলাচলের সড়কপথ। সেখান দিয়ে অধিক পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো চলার সময় এপাশ-ওপাশ হেলে যাচ্ছে। অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচল ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনাটির আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকছে। ফ্লাইওভারের উত্তরামুখী লুপে দিনের অধিকাংশ সময় থাকে যানজট। সন্ধ্যার পর তা ভয়াবহ রূপ নেয়। রাত বাড়লে সেই যানজটে ৪০-৫০ টন পণ্য নিয়ে যোগ দিচ্ছে বড় বড় লরি। ১০-১২ টন পণ্য নিয়ে উঠে যাচ্ছে ৫ টনের ট্রাক। চলছে নির্মাণকাজের ভারী যানবাহন। যানজটে ভারী যানবাহনগুলো থেমে থেমে চলার সময় অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি হচ্ছে ফ্লাইওভারে। সন্ধ্যার পরই ১৪ লেনের ৩০০ ফুট এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ঢাকার বাইরে থেকে ঢুকছে হাজার হাজার মালবাহী ট্রাক। ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে যেতে এসব যানবাহন উঠছে ফ্লাইওভারে। ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ ওজনের গাড়ি চলাচল করায় ফ্লাইওভারটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন অভিমত প্রকৌশলীদের। বিশেষ করে বালু ও পাথরবাহী ট্রাকের যাতায়াত ফ্লাইওভারের ক্ষতি করছে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনেই ফ্লাইওভারটি নির্মিত হয়েছে। নির্ধারিত ওজনের যানবাহন চললে কোনো ধরনের ধকল সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু আমাদের দেশে ১৬ টনের গাড়িতে অনায়াসে ৬-৭ টন বেশি পণ্য পরিবহন করা হয়। এসব যানবাহন ফ্লাইওভারে চলাচল করলে পিচের ক্ষতি অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়; যা মেরামত করা বেশ জটিল। কুড়িল শুধু নয়, সব ফ্লাইওভারে যাতে নির্দিষ্ট ওজনের বেশি যানবাহন চলাচল না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্দিষ্ট মাপের চেয়ে ভারী যানবাহন নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবা যেতে পারে। কোনো যানবাহন চলাচলের চেষ্টা করলে বড় ধরনের জরিমানার ব্যবস্থা থাকলে অর্বাচীনদের সামাল দেওয়া সহজ হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর