স্কিন ক্রিমের নামে চলছে প্রতারণা। টাকা দিয়ে কেনা হচ্ছে সর্বনাশ। আত্মসাৎ করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। রং ফর্সা করার লোভনীয় প্রচারণায় মুগ্ধ হয়ে যারা বিষাক্ত স্কিন ক্রিম কিনছেন তাদের অনেকেই নিজেদের মুখের ত্বকের সর্বনাশ ঘটাচ্ছেন। শুরুতে যারা এসব উপকরণ ব্যবহার করছেন তারা তাদের ব্যবহৃত সুন্দর হওয়ার ক্রিমে মুগ্ধ হচ্ছেন। এটিকে ভাবছেন জাদুকরী ক্রিম। কারণ ক্রিম মাখলে মুহূর্তেই ফর্সা হয়ে যাচ্ছে ত্বক! তবে রঙের এ পরিবর্তন স্থায়ী হচ্ছে না ২৪ ঘণ্টাও। উল্টো কিছুদিন যেতেই ত্বকে দেখা দিচ্ছে মেছতাসহ নানা চর্মরোগ। নমুনা পরীক্ষায় এসব ক্রিমে বিপজ্জনক মাত্রায় মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন রাসায়নিক পাওয়া যাচ্ছে। যা শুধু ত্বক নয়, নানাভাবে শরীরে প্রবেশ করে ক্ষতি করছে কিডনি-লিভারসহ নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। কমিয়ে দিচ্ছে স্মৃতিশক্তি। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন এসব বিপজ্জনক ক্রিম নিষিদ্ধ করলেও বাজারে এগুলোর দাপট কমছে না। চিকিৎসকদের মতে, কোনো ক্রিমই ত্বক খুব একটা ফর্সা করতে পারে না। তাৎক্ষণিক ত্বক চকচকে করতে কিছু ক্রিমে বিপজ্জনক মাত্রায় মার্কারি, হাইড্রোকুইনোন, লেড, স্টেরয়েডের মতো রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। এগুলো শুধু ত্বক নয়, নানাভাবে শরীরে প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন এক প্রতিবেদনে মার্কারিযুক্ত কসমেটিক্স ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, মার্কারিযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করলে শুধু ওই ব্যক্তিই নয়, পরিবারের অন্য সদস্যরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। ব্যবহারকারীর সংস্পর্শে এসে অন্যরা নিঃশ্বাসের সঙ্গে মার্কারি গ্রহণ করে। মার্কারি লেগে থাকা কাপড়, তোয়ালে থেকে এ বিষ অন্যদের শরীরে প্রবেশ করে। এতে শিশুদের ব্রেন ডেভেলপমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়। মা ব্যবহার করলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হয়। দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি, স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। পশ্চিমা বিশ্বে এ ধরনের ক্ষতিকর ক্রিমের বিপণন কড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ করা হলেও আমাদের মতো সব সম্ভবের দেশে তা থাবা বিস্তার করছে আগ্রাসি চেহারায়। এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টিও জরুরি।