দেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অহরহ ঘটছে। গত বুধবার জামালপুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানকে নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের দায়ে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধিকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৫ মাসে বাংলাদেশে চারজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন। পুলিশ ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত। সংবিধানে গণমাধ্যমকে ফোর্থ স্টেটের মর্যাদায় বিভূষিত করা হয়েছে। তারপরও এ দেশে সাংবাদিকতা একটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। ১৫ মাসে চার সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড তারই উদাহরণ। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসকের) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত পাঁচ মাসে দেশে ১০১ জন সাংবাদিক নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। রাজনৈতিক দলের নেতা, পৌর মেয়র, ইটভাটার মালিক, অজ্ঞাত মোবাইল থেকে ফোন করে প্রাণনাশের হুমকির দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের। এ ছাড়া ইউপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থী এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাছ থেকে সাংবাদিকরা হুমকি পাচ্ছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক নির্যাতন, অপহরণ ও বোমা হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারাও নির্যাতন ও হুমকির শিকারও হচ্ছেন তাঁরা। আসকের হিসাবের বাইরে গত ১৪ জুন রাতে জামালপুরে বকশীগঞ্জ উপজেলার পাথাটিয়া এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে হত্যা করা হয় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে। সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপারে নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ বলে দাবি করে। তারপরও সারা দেশে প্রভাবশালীদের দ্বারা একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। সাংবাদিক নাদিম হত্যায় জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।