রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

সর্বনাশা পলিথিন

পরিবেশের জন্য সাক্ষাৎ বিপদ

পলিথিন দেশের পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। রাজধানীসহ বড় নগরগুলোতে বর্ষা মৌসুমে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় তার পেছনে রয়েছে পলিথিন নামের ভয়াল দৈত্যের থাবা। রাজধানীর কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে শপিং মলগুলোয় মাত্রাতিরিক্ত পলিথিন ব্যবহারে ঢাকার পুকুর-ডোবা, ড্রেন, জলাশয়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। পরিবেশ অধিদফতর থেকে পলিথিনের ব্যবহার রোধে মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হলেও পলিথিন ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া মনোভাব এবং ব্যবহারকারীদের অসচেতনতায় এখনো পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করা যায়নি। সরকার পরিবেশ দূষণ রোধে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে ‘সোনালি ব্যাগ’-এর উদ্ভাবন করলেও এখনো এর বাণিজ্যিক ব্যবহার জোরেশোরে শুরু করা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় রাজধানীতে পলিথিন ব্যাগ তৈরির মূল কেন্দ্র চকবাজারের কারখানাগুলোর মেশিন বেশ কয়েকবার জব্দ করে ধ্বংস করা হলেও চাহিদা থাকায় কারখানা মালিকরা আবারও পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও বিক্রিতে জড়িয়ে পড়েন। চকবাজার ছাড়াও টঙ্গী, কারওয়ান বাজারসহ পলিথিন ব্যাগ যেখানে তৈরি হয় এবং সারা দেশে সরবরাহ হয় এমন কারখানাগুলো বন্ধ করলেও কিছুদিন পর তা আবারও চালু হয় প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের গোপন সমঝোতায়। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা শহরে একটি পরিবার প্রতিদিন গড়ে চারটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে। সে হিসেবে শুধু রাজধানীতে প্রতিদিন ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি পলিথিনের ব্যাগ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর হিসাবে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি পলিথিনের ব্যাগ জমা হচ্ছে। ২০০৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশে পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে তিন গুণের বেশি। ২০০২ সালে সরকারিভাবে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে আইন প্রয়োগকারীদের গাফিলতিতে কিছুদিনের মধ্যেই পলিথিনে বাজার ছেয়ে গেছে। পরিবেশের জন্য বিপদ হয়ে আবির্ভূত হওয়া পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভূমিকা প্রয়োজন। জনসচেতনতার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর