দেশের নদনদীতে পানি বাড়ছে হু হু করে। এ বছর এখনো পর্যন্ত দেশে যে বৃষ্টি হয়েছে তার গড় গত কয়েক বছরের তুলনায় কম। তবে আষাঢ় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার বন্ধ্যা কেটেছে। গত দুই দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে নদনদীতে পানি বৃদ্ধির পেছনে অবদান রাখছে উজান থেকে আসা ঢল। এর ফলে দেখা দিয়েছে আগাম বন্যার আশঙ্কা। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকায় কর্তৃপক্ষ পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে ব্যাপকভাবে। তবে তা বিপৎসীমার নিচে বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকে। পানি আরও বাড়লে তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারী ও লালমনিরহাটে নদীর চরের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। ফসলহানির শঙ্কায় ভুগছে কৃষকরা। হঠাৎ পানি বাড়ায় গবাদিপশু নিয়ে অনেকে বিপাকে পড়েছেন। কুড়িগ্রামে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টির বদৌলতে অসহনীয় গরম থেকে আপাতত মুক্তি মিললেও কুড়িগ্রামের নদনদী অববাহিকায় বন্যার ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। পানি বাড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে আপাতত বন্যার কোনো পূর্বাভাস নেই। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকা বাদে দেশের অন্যান্য নদ-নদীর অবস্থা এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিক। তবে বিশেষজ্ঞরা নানা কারণে এ বছর বন্যার আশঙ্কা করছেন। উজানে ভারী বৃষ্টিতে অনিবার্যভাবে বাড়ছে নদনদীর পানি। দেশের নদনদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় উজান থেকে আসা ঢলের পাশাপাশি দেশে ভারী বৃষ্টি হলে নদনদী ফুঁসে উঠবে। এ পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রশাসনকে আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে আগাম বন্যার বিষয়টি।